সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

চট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলা, সংসদ সদস্যের কার্যালয়ে আগুনচট্টগ্রামে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলা, সংসদ সদস্যের কার্যালয়ে আগুন

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল চলাকালে চট্টগ্রাম নগরে শিক্ষামন্ত্রী, সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসা, চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্যের কার্যালয়, লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং টাইগারপাস পুলিশ বক্সে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার এসব ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে নগরের চশমা হিলে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয়েছে। এ সময় বাসার সামনে থাকা দুটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয় এবং এর একটিতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাসার ভেতরের আসবাব ভাঙচুর করা হয়েছে। চশমা হিলের ওই বাসভবনে থাকতেন মহিবুলের বাবা সাবেক সিটি মেয়র এবিএম মহিউদ্দীন চৌধুরী। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিল থেকে এ হামলা হয় বলে অভিযোগ। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেন ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। হামলার সময় মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বাড়িতে ছিলেন না। তবে পরিবারের সদস্যরা বাসায় ছিলেন।

তবে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি টাইগারপাস মোড়ে শেষ হয়েছে। এরপর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দায় নেবে না।’

এর আগে বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে নগরের লালখান বাজারে চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মো. মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয়েও হামলা হয়। এ সময় কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়। এছাড়া নগরের নিউমার্কেট, টাইগারপাস, জিইসি মোড়ে পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে সারা দেশের মতো চট্টগ্রামের নিউমার্কেট চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলের আয়োজন করা হয়। বিকাল ৩টা থেকে নিউমার্কেট চত্বরে বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। সেখানে দীর্ঘক্ষণ অবস্থান করার পর মিছিল নিয়ে বের হন তারা। মিছিলটি রেলওয়ে স্টেশন, টাইগারপাস, জিইসিমোড় এবং ২ নম্বর গেট ষোলশহর হয়ে বহদ্দারহাটে গিয়ে শেষ হয়।

এই মিছিল থেকে বিকালে টাইগারপাস এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের বক্সে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। এরপর মিছিলটি লালখান বাজার এলে সেখানে সিটি করপোরেশনের লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর আবুল হাসনাত বেলালের কার্যালয়ে ভাঙচুর করা হয়। ওয়াসা ভবনের সামনে থাকা চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্য মহিউদ্দিন বাচ্চুর কার্যালয় ভাঙচুর করা হয়। নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেট এলে সেখান থেকে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর বাসায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করা হয়। পরে মিছিলটি নগরীর বহদ্দারহাটে গেলে সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরীর বাসায় হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ এবং সরকারদলীয় লোকজন আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান। এতে চার জন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে একজনের নাম আবদুস সাত্তার। তিনি পিঠে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনার পর থেকে বহদ্দারহাট এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশ ও সরকারদলীয় লোকদের সঙ্গে দফায় দফায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এসব হামলার জন্য বিএনপি-জামায়াতের লোকজনকে দায়ী করেছে আওয়ামী লীগ। নগর আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক নগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ফরিদ মাহমুদ বলেন, ছাত্রদের আন্দোলনে ঢুকে জামায়াত-শিবিরের লোকজন এসব হামলা চালিয়েছে। এর সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (এডিসি-পিআর) কাজী মোহাম্মদ তারেক আজিজ বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‌‘শিক্ষামন্ত্রীর বাসা, সিটি করপোরেশনের মেয়রের বাসা, চট্টগ্রাম-১০ আসনের সংসদ সদস্যের কার্যালয়, লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় এবং টাইগারপাস পুলিশ বক্সে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি কয়েকটি স্থাপনায় হামলা করেছে আন্দোলনকারীরা।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *