নতুন কারিকুলামে সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ে আলোচিত-সমালোচিত ইস্যু ‘শরীফ থেকে শরীফা’ হওয়ার গল্প। থার্ড জেন্ডার নাকি ট্রান্সজেন্ডার এ নিয়ে আলোচনার মধ্যে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের বই ছেড়া এবং তাকে চাকরিচ্যুতির পর তা সারাদেশে আলোচনার জন্ম দেয়। মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) আন্দোলনে নামেন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, ওই গল্পে যদি কোনো অসঙ্গতি থাকে তবে সংশোধন করা হবে। মানুষে মানুষে সাদৃশ্য ও ভিন্নতা অধ্যায়ের ‘শরীফার গল্প’ নামের গল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য গতকাল বুধবার উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটি আনুষ্ঠানিকভাবে আজ বৃহস্পতিবার বসছেন বলে জানা গেছে।
পাঁচ সদস্যের কমিটির আহ্বাবায়ক এনসিটিবি সদস্য (কারিকুলাম) অধ্যাপক মশিউজ্জামান বলেন, গতকাল বুধবার মাত্র কমিটি হয়েছে। এখনও সব সদস্যের সঙ্গে কথায় বলা হয়নি। তবে আজকের বিকালের মধ্যে আনুষ্ঠানিক একটি বৈঠক করা হতে পারে বলে জানান তিনি। কমিটি কোন পদ্ধতিতে কাজ করবে জানতে চাইলে তিনি জানান, প্রথম হলো সবাই আগে বসা। তারপর বলতে পারবো কীভাবে কাজ করবো।
জানা গেছে, পাঁচ সদস্যের এই কমিটিতে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আব্দুর রশীদকে আহ্বায়ক করা হয়েছে। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- ইসলামিক ফাউন্ডেশনের গভর্নর মুফতি মাওলানা কফিল উদ্দীন সরকার, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) পরিচালক অধ্যাপক আবদুল হালিম এবং ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোহাম্মদ আব্দুর রশিদ।
নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে প্রণীত সপ্তম শ্রেণির ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান বইয়ের একটি অধ্যায়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে একটি পাঠ রয়েছে। এ পাঠের বিষয়বস্তু নিয়ে বছরের শুরু থেকেই বিতর্ক চলছে। সম্প্রতি বিষয়টি নতুন করে সামনে এসেছে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব উৎস’র একটি অনুষ্ঠানে বইয়ের ওই গল্পের পাতা ছিঁড়ে ফেলার পর।
বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, পাঠ্য বইয়ে হিজড়া জনগোষ্ঠী সম্পর্কে জনসচেতনতামূলক পাঠ অংশের উপস্থাপনায় কোনো বিতর্ক বা বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়ে থাকলে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করলে কিছুটা পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
বইয়ে শব্দটি ট্রান্সজেন্ডার নয়, থার্ড জেন্ডার আছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেটি আইনত স্বীকৃত, যারা জৈবিক কারণে তৃতীয় লিঙ্গ বা সামগ্রিকভাবে সমাজে হিজড়া নামে পরিচিত। তারা এ দেশের নাগরিক। অবশ্যই তাদের নাগরিক সুবিধা আছে।