নভেম্বর ৮, ২০২৪

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব লেবার স্টাডিজ (বিলস) এর উদ্যোগে ‘চা খাতে নিয়োজিত নারী শ্রমিকদের অধিকার ও শোভন কাজের বিদ্যমান পরিস্থিত’ শীর্ষক গবেষণার ফলাফল অবহিত করতে আজ মঙ্গলবার (১২ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। অনুষ্ঠানে তারা বাংলাদেশের চা শ্রমিকদের অধিকার পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন।

তারা জানায়, সামগ্রিকভাবে চা শ্রমিকদের জন্য বিদ্যমান আইনি মানদন্ডের তুলনায় প্রকৃত শ্রমিক অধিকার পরিস্থিতি অসন্তোষজনক, চা বাগানে কর্মসংস্থানের সুযোগ খুবই সীমিত এবং চাকরির নিরাপত্তা সুরক্ষিত নয়, চা শ্রমিকদের ৯৫ ভাগ স্থায়ী এবং পাঁচ ভাগ অস্থায়ী শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, শতকরা ৯৭ ভাগ নারী শ্রমিকের কোন নিয়োগপত্র নেই, শতকরা ৮৭ ভাগ শ্রমিকের কোন পরিচয় পত্র নেই, শতকরা ১০ ভাগ নারী শ্রমিক পরিচয় পত্র কি তা জানেন না, শতকরা ১০০ ভাগ শ্রমিক বলেছেন চা বাগানে তাদের কোন সার্ভিস বুক নেই, শতকরা ৪৯ ভাগ শ্রমিক বলেছেন অতিরিক্ত আয়ের জন্য তারা ১ থেকে ২ ঘন্টা ওভারটাইম করেন।

চা শ্রমগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন, চা বাগানে শোভন মজুরী বাস্তবায়ন এবং চা শ্রমিকদের দক্ষতাবৃদ্ধির লক্ষ্যে অক্সফ্যাম’র সহায়তায় বিলস পরিচালিত “বাংলাদেশে চা শিল্পে নারী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন, শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় সম্প্রতি এই গবেষণা সম্পন্ন হয়। গবেষণার উদ্দেশ্য ছিল বাংলাদেশের নারী চা শ্রমিকদের সামগ্রিক অধিকার পরিস্থিতি চিহ্নিত করা, চা বাগানে নারী শ্রমিকদের শোভন কাজ পরিস্থিতি ও আর্থসামাজিক অবস্থা বিশ্লেষণ, ভ্যালি এবং পঞ্চায়েত কমিটির ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের জ্ঞান ও দক্ষতা মূল্যায়ন এবং নারী চা বাগান শ্রমিকদের অবস্থা সম্পর্কে জাতীয় পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ পরামর্শ গ্রহণ।

বিলস ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ মজিবুর রহমান ভূঞাঁর সভাপতিত্বে এবং বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য নইমুল আহসান জুয়েল’র সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিলস উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য কামরুল আহসান, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব বুলবুল এবং বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের অর্থ সম্পাদক পরেশ কালিন্দী। সূচনা বক্তব্য রাখেন বিলস পরিচালক কোহিনূর মাহমুদ ও স্বাগত বক্তব্য রাখেন অক্সফাম ইন বাংলাদেশ’র ফেমিনিস্ট লিডারশিপ এন্ড পার্টনারশিপ স্পেশালিষ্ট শাহজাদী বেগম। গবেষণা রিপোর্ট উপস্থাপন করেন বিলস’র উপ-পরিচালক মনিরুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, যেখানে ৫০ ভাগের বেশি নারী শ্রমিক, সেখানে নারী শ্রমিকদের জন্য কোন যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি নেই। চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য ভূমি অধিকারের বিষয়টিও পরিষ্কার নয়। সরকার চা বাগানের জমি দিয়েছে চা চাষ করতে কিন্তু দেখা গেছে, সেখানে অন্য ফসলও চাষ করা হয়। এ ছাড়া চা শ্রমিকদের সন্তানদের স্কুলে পাঠানোর যথাযথ উদ্যোগও লক্ষ্য করা যায় না। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থি ছিলেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...