

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত বাংলাদেশ অটোকারস কর্তৃপক্ষ লোকসানকে আড়াল করে সম্পদ ও মুনাফা বেশি দেখিয়েছে। কোম্পানিটির ২০২১-২২ অর্থবছরের আর্থিক হিসাব নিরীক্ষায় এ তথ্য জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
বিডি অটোকারস কর্তৃপক্ষ ২০২১-২২ অর্থবছরে শেয়ারপ্রতি ০.৪৯ টাকা মুনাফা (ইপিএস) দেখিয়েছে। কিন্তু সঠিক হিসাব করলে শেয়ারপ্রতি ০.১৯ টাকা লোকসান হত। একইসঙ্গে ৭.০৬ টাকার শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ৬.৩৮ টাকায় নেমে আসত।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, বিডি অটোকারস কর্তৃপক্ষ আমদানি পর্যায়ে ভ্যাট রাখার জন্য ২০০৭ সালের ২৮ নভেম্বর ও ২০০৮ সালের ২২ আগস্ট সরকারের কাছে ১০ লাখ ৭০ হাজার টাকা দাবি করে। কিন্তু সরকার এখন পর্যন্ত তাতে কোন সাড়া দেয়নি। যাতে ওই দাবিকৃত অর্থ হিসাব থেকে বাদ দিতে প্রফিট অ্যান্ড লস হিসাবে ব্যয় দেখানো দরকার।
এদিকে অগ্রিম আয়কর হিসাবে ১৬ লাখ ৯৫ হাজার ৯৭৪ টাকা ও অগ্রিম মূলধনী ব্যয় হিসাবে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৬৩১ টাকা দেখিয়ে আসছে। এই মোট ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৬০৫ টাকাও হিসাব থেকে বাদ দিতে প্রফিট অ্যান্ড লস হিসাবে দেখানো দরকার।
নিরীক্ষক জানিয়েছেন, ওইসব অর্থ সঠিকভাবে হিসাব বহি থেকে বাদ দিলে কোম্পানিটির ২৯ লাখ ৫০ হাজার ৩৭৭ টাকার সম্পদ কমে আসবে। একইসেঙ্গে ২০২১-২২ অর্থবছরে সমপরিমাণ মুনাফা কমে আসত। অন্যভাবে বললে ০.৬৮ টাকা করে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য (এনএভিপিএস) ও শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) কমে আসত।
শ্রম আইন অনুযায়ি ওয়ার্কার্স প্রফিট পার্টিসিপেশন ফান্ডের (ডব্লিউপিপিএফ) অর্থ বছর শেষ হওয়ার ৯ মাসের মধ্যে বিতরন করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু কোম্পানিটিতে ২৯ লাখ ৫৪ হাজার ৬৪৮ টাকার ডব্লিউপিপিএফ রয়েছে। যার ৯ লাখ ৩৩ হাজার ৯৫৬ টাকা পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখা হয়েছে।
শেয়ারবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নির্দেশনা অনুযায়ি ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে অবন্টিত লভ্যাংশ হস্তান্তর করেনি বিডি অটোকারস কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটিতে ৩ বছরের বেশি পুরাতন অবন্টিত লভ্যাংশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন নিরীক্ষক।
জানা গেছে, কোম্পানিটিতে ৪৩ লাখ ৪৪ হাজার ৪৮৯ টাকার (এরমধ্যে ২১ লাখ ৫৯ হাজার ২৬৮ টাকার) অবন্টিত লভ্যাংশ রয়েছে। যা বিএসইসির নির্দেশনা অনুযায়ি পৃথক ব্যাংক হিসাবে রাখা দরকার। কিন্তু তারা মাত্র ১১ লাখ ৪৮ হাজার ৬৯১ টাকা রেখেছে।
উল্লেখ্য, ১৯৮৮ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া বিডি অটোকারসের পরিশোধিত মূলধনের পরিমাণ ৪ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এরমধ্যে শেয়ারবাজারের বিভিন্ন শ্রেণীর (উদ্যোক্তা/পরিচালক ব্যতিত) বিনিয়োগকারীদের মালিকানা ৬৯.৯৪ শতাংশ। কোম্পানিটির শনিবার (০৩ মার্চ) লেনদেন শেষে শেয়ার দর দাঁড়িয়েছে ১১৭.৩০ টাকায়।