নভেম্বর ১৬, ২০২৪

গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে প্রায় ছয় বছর আগে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয় মিয়ানমারের লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক। এই সংকট নিরসনে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বরং ক্রমাগত নীরব ভূমিকা পালন করছে। এই অবস্থায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অভিভাবকের ভূমিকা পালন করা এই সংস্থাটির আরও সক্রিয় ভূমিকা প্রত্যাশা করছে বাংলাদেশ।

স্থানীয় সময় বুধবার (৩ মে) জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত ‘ফিউচার প্রুফিং ট্রাস্ট ফর সাস্টেইনিং পিস’ শীর্ষক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বক্তব্যে এমন প্রত্যাশার কথা জানান জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত।

জনগণ ও বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অবিশ্বাসের প্রসঙ্গ টেনে রাষ্ট্রদূত বিশ্বশান্তির জন্য দৃশ্যমান হুমকিসমূহ মোকাবেলা এবং রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের মতো সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণদের সুরক্ষায় সংহতি ও ঐক্য প্রদর্শনের জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মাঝে বিশ্বাস অর্জনের জন্য পরিষদকে আরও বেশি সক্রিয় হওয়া আবশ্যক।

স্থায়ী প্রতিনিধি মুহিত তার বক্তব্যে বৈশ্বিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার্থে শান্তিরক্ষীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জাতিসংঘ শান্তি বিনির্মাণ কমিশনারকে এ সংক্রান্ত ম্যান্ডেট আরও জোরদার করারও আহ্বান জানান। রাষ্ট্রদূত টেকসই ও দীর্ঘস্থায়ী শান্তি বিনির্মাণে নারীর পূর্ণ, সমান ও অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণের ওপর গুরুত্বারোপ করেন জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ও মানবাধিকার রক্ষাসহ বৃহত্তর শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে তিনি জাতিসংঘের এ সকল কর্মসূচির পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে পরবর্তী কয়েক মাস গণহত্যা ও নির্যাতনের মুখে লাখ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে থাকে। এর আগেও বিভিন্ন সময় বাংলাদেশে আসে হাজার হাজার রোহিঙ্গা। সবমিলিয়ে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজারে ক্যাম্পগুলোতে অবস্থান করছে।

সর্বাত্মক চেষ্টা করেও গত প্রায় ছয় বছরে সরকার একজন রোহিঙ্গাকেও নিজ দেশ মিয়ানমারে ফেরাতে পারেনি। আন্তর্জাতিক চাপের মুখে বারবার আশ্বাস দিলেও মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা টালবাহানা করছে। ইতোমধ্যে দেশটিতে সামরিক শাসন ফিরে আসায় প্রত্যাবাসনের আলোচনা অনেকটা এতদিন থমকে ছিল। তবে সম্প্রতি দেশটির একটি প্রতিনিধি দলের সফরের পর আবার নতুন করে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি আলোচনায় এসেছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...