কখনো রাশিয়ার মূল ভূখণ্ড, কখনো রুশ-অধিকৃত এলাকার উপর বিচ্ছিন্ন হামলা চালাচ্ছে ইউক্রেন৷ এদিকে পশ্চিমা বিশ্ব থেকে আরও অস্ত্র ও গোলাবারুদ সরবরাহের আশ্বাস পেয়ে ইউক্রেন রাশিয়ার বাহিনীর উপর পালটা আক্রমণের পথে যাচ্ছে বলে ধারণা করা হচ্ছে৷ সোমবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথ উদ্যোগে ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ কেনার সিদ্ধান্ত সেই উদ্যোগকে আরও জোরালো করেছে৷
সোমবার ইইউ পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীদের বৈঠকে আগামী ১২ মাসে ইউক্রেনের জন্য ১০ লাখ কামানের গোলা কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ইইউ পররাষ্ট্র বিষয়ক প্রধান জোসেপ বরেল বলেন, প্রাথমিকভাবে কিয়েভের জন্য গোলাবারুদ কিনতে ২০০ কোটি ইউরো বরাদ্দ করা হয়েছে৷ এমন অভূতপূর্ব সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জার্মান প্রতিরক্ষামন্ত্রী বরিস পিস্টোরিউস বলেন, বৃহত্তর কাঠামোগত বোঝাপড়ার আওতায় প্রতিরক্ষা বাজারে ইউরোপের শক্তি একত্রিত করা হচ্ছে৷ ইইউ-র ১৮টি দেশ ও নরওয়ের মধ্যে এই সহযোগিতার ফলে আপাতত ইউক্রেন বেশ লাভবান হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
বেশ কয়েক মাস ধরে রক্ষণাত্মক প্রতিরোধ চালিয়ে আসার পর ইউক্রেন রাশিয়া-অধিকৃত এলাকার উপর হামলা চালিয়েছে৷ সে দেশের সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী ক্রাইমিয়া উপদ্বীপের উত্তরে জানকোই অঞ্চলে এক হামলায় রাশিয়ার ক্রুজ মিসাইলের ভাণ্ডার ধ্বংস করা হয়েছে৷ সেগুলি রাশিয়ার ব্ল্যাক সি ফ্লিটের মাধ্যমে ইউক্রেনের উপর নিক্ষেপ করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছিল বলে ইউক্রেন দাবি করছে৷ ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়েছে, যে রেলপথে ‘কালিবার কেএন’ ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে যাবার সময়ে সেগুলির উপর হামলা চালানো হয়৷ এই ক্ষেপণাস্ত্র নাকি স্থলের উপর আড়াই হাজার কিলোমিটার ও সমুদ্রের উপর ৩৭৫ কিলোমিটার দূরে আঘাত হানতে পারে৷
রাশিয়া অবশ্য সরাসরি ইউক্রেনের দাবি স্বীকার করেনি৷ জানকোই অঞ্চলের রাশিয়া নিয়ন্ত্রিত কর্মকর্তা ইহর ইভিন বলেন, শহরের উপর ড্রোন হামলায় এক ৩৩ বছর বয়সি ব্যক্তি আহত হয়েছে৷ এক স্কুল ও দোকানসহ কয়েকটি ভবনে আগুন লেগেছে বলেও তিনি দাবি করেন৷ রাশিয়া নিযুক্ত ক্রাইমিয়া অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান সের্গেই আকসিয়োনভ বলেন, জানকোই অঞ্চলের উপর এয়ার ডিফেন্স প্রণালী ইউক্রেনীয় ড্রোন ধ্বংস করেছে৷
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী রাশিয়া-অধিকৃত এলাকায় গাড়ি বোমা হামলায় এক ‘বিশ্বাসঘাতক’-কেও হত্যা করা হয়েছে৷ স্যারহি মোস্কালেংকো নামের সেই ব্যক্তি কারাগারের প্রধান হিসেবে খেরসন অঞ্চলে রুশ বাহিনীর সঙ্গে সহযোগিতার করে নিপীড়ন কেন্দ্রের আয়োজন করেন বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে৷ সব ‘যুদ্ধাপরাধী’দের এমন দশা হবে বলে কর্তৃপক্ষ সতর্ক করে দিয়েছে