বগুড়ার রিকশাচালকের এমএ পাস করা স্ত্রী সিমানুরকে চাকরি দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে বগুড়ার জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. সাইফুল ইসলাম কালেক্টর পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষক পদে চাকরির নিয়োগপত্র দেন।
জেলার গাবতলী উপজেলার বাগবাড়ি গ্রামের ফেরদৌস যখন বিয়ে করেন তার স্ত্রী সিমানুর এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিলেন। বিয়ের পর স্ত্রীকে দেয়া কথা ফেরদৌস রেখেছিলেন। রিকশায় স্ত্রীকে কলেজে পৌঁছে দিয়ে তিনি নিজে রিকশা চালিয়ে সংসারের বোঝা টেনেছেন। রিকশা চালিয়ে সিমানুরের লেখাপাড়ার খরচ জুগিয়েছেন। স্ত্রীকে এমএ পাস করিয়ে আবার স্ত্রীর জন্য চাকরি খোঁজেন রিকশা চালানোর পাশাপাশি। এ দম্পতির সংগ্রামী জীবনকথা নিয়ে একটি প্রতিবেদন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর নজরে আসে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার। সাথে বগুড়া জেলা প্রশাসককে খোঁজখবর নিতে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে বার্তা পেয়ে সাথে সাথে বগুড়া জেলা প্রশাসক প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম সোমবার ব্যবস্থা নেন। সোমবার বিকলে দম্পতিকে ডেকে সব কথা শোনেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃষ্টিতে আসার পর ভাগ্য বদলে যায় প্রত্যন্ত গ্রামের দরিদ্র পরিবারটির। রিকশাচালক ফেরদৌস মন্ডললের স্ত্রী এখন বগুড়ার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষক। চাকরির সঙ্গে মিলেছে সিমানুরের স্বামী রিকশাচালক ফরদৌস মন্ডলের রিকশাা কেনার ঋণ পরিশোধের জন্য ২৫ হাজার টাকা, বাড়ি সংস্কারের টিন ও আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে রিকশাচালকের উচ্চশিক্ষিত স্ত্রী যেন শক্তিশালী আর্থিক ভিত্তিতে পৌঁছাতে পারেন সে জন্য পেলেন একটি ল্যাপটপ। খবর বাসস।
জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম জানান, এ সবই হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায়। সোমবার সিমানুরের হাতে প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা প্রশাসক। নিয়োগপত্র হাতে পেয়ে তিনি স্কুলে গিয়ে সহকারী স্কুল শিক্ষক পদে যোগদান করেন। রিকশাচালক ফেরদৌস মন্ডললের স্ত্রী এখন বগুড়ার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রাথমিক শাখার সহকারী শিক্ষক। এখন সিমানুরের উৎসাহ আরও বেড়ে গেছে। চাকরির পাশাপাশি তিনি এখন বিসিএস-এর জন্য প্রস্তুতি নিতে চান। তিনি জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তারা কৃতজ্ঞতার কথা পৌঁছে দেয়ার অনুরোধ জানান। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে ল্যাপটপ, চাকরির নিয়োগপত্র, ধার করে কেনা রিকশার ২৫ হাজার টাকা তার হাতে তুলে দেন জেলা প্রশাসক।