রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, শেখ রাসেলকে হত্যার মধ্য দিয়ে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারদের নিশ্চিহ্ন করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু তারা সফল হয়নি। রাসেল আজ বিশ্বে অধিকার বঞ্চিত শিশুদের প্রতীক ও মানবিকসত্তা হিসেবে সবার মাঝে বেঁচে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
বুধবার (১৮ অক্টোবর) ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপতি। তিনি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শহীদ শেখ রাসেলের শুভ জন্মদিন ও ‘শেখ রাসেল দিবস’ উপলক্ষ্যে তার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, ১৯৬৪ সালের ১৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু পরিবারে আনন্দের বার্তা নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন শেখ রাসেল। আদরের রাসেল ছিলেন পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট। বঙ্গবন্ধু তার প্রিয় ব্যক্তিত্ব বিখ্যাত দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের নামানুসারে ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন রাসেল।
রাষ্ট্রপতি বলেন, রাজনৈতিক কারণে বঙ্গবন্ধুকে জীবনের দীর্ঘসময় কাটাতে হয়েছে কারাগারে। এজন্য শিশু রাসেল পিতার কাঙ্ক্ষিত সান্নিধ্য ও আদর-যত্ন থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। বঙ্গবন্ধু পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো রাসেলও ছিলেন সহজ-সরল ও অত্যন্ত বিনয়ী। অন্য শিশুদের সঙ্গে নিজের জামা-কাপড় ও খেলনা ভাগাভাগি করা এবং মানুষের উপকার করার চেষ্টা তার মাঝে ছোটবেলা থেকেই পরিলক্ষিত হয়েছে। তিনি ছিলেন আদর্শ পিতার যোগ্য সন্তান।
তিনি বলেন, শেখ রাসেল বেঁচে থাকলে হয়ত আজ দেশের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করতেন ও নেতৃত্ব দিতেন। কিন্তু বাঙালি জাতির দুর্ভাগ্য ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নির্মমভাবে শহীদ হন। সেদিন ঘাতকরা ১০ বছরের ছোট্ট শিশু রাসেলকেও রেহাই দেয়নি। ছোট্ট রাসেল সেদিন ঘাতকদের মিনতি করে বলেছিল, ‘আমি মায়ের কাছে যাব’, কিন্তু কুলাঙ্গার ঘাতকদল তাকে নির্মমভাবে হত্যা করে। শিশু রাসেল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুলের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু শিশুদের খুবই ভালোবাসতেন। তিনি জানতেন সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে হলে নতুন প্রজন্মকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। সোনার মানুষ গড়তে শৈশব থেকেই শিশুদের মধ্যে চারিত্রিক গুণাবলির উন্মেষ ঘটাতে হবে। জ্ঞান-গরিমা, শিক্ষা-দীক্ষা, সততা, দেশপ্রেম ও নিষ্ঠাবোধ জাগ্রত করার মাধ্যমে তাদের প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। কোনো শিশুই যাতে রাসেলের মতো নৃশংসতার শিকার না হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। পৃথিবীর সকল শিশু নিরাপদ ও আনন্দময় পরিবেশে ভালোবাসার মধ্যে বেড়ে উঠুক- শেখ রাসেল দিবসে এ আমার প্রত্যাশা।
রাষ্ট্রপতি শহীদ শেখ রাসেলের জন্মবার্ষিকীতে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন।