নির্বাচনকে সামনে রেখে বছরের শুরুতে অযোধ্যায় রামমন্দির উদ্বোধন করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু, সবাইকে অবাক করে উত্তর প্রদেশের অযোধ্যা শহরের ফৈজাবাদ আসনে হেরেছে দেশটির ক্ষমতাসীন দল বিজেপি।
উত্তর প্রদেশের ফৈজাবাদ আসনে বিজেপির প্রার্থী লাল্লু সিং পরাজিত হয়েছেন। আসনটিতে জিতেছেন সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ প্রসাদ।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ফৈজাবাদে বিজেপির প্রার্থী লাল্লু সিংয়ের থেকে সমাজবাদী পার্টির প্রার্থী অবধেশ প্রসাদ প্রায় ৫৫২২২ ভোটে এগিয়ে রয়েছেন। তবে শুধু ফৈজাবাদ নয়, গোটা উত্তর প্রদেশেই বিপর্যয় নেমে এসেছে বিজেপির। মাত্র ৩৭ আসনে এগিয়ে রয়েছে গেরুয়াশিবির।
২০১৯ সালে সেখানে বিজেপি জিতেছিল ৬২টি আসন। সেখানে ইন্ডিয়া জোট এগিয়ে ৪২ আসনে। রাহুল গান্ধি, অখিলেশ যাদব, ডিম্পল যাবদরা বিপুল ভোটে জিতেছেন। উল্টোদিকে বিজেপির মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি আমেঠী কেন্দ্রে হেরে গিয়েছেন।
গত জানুয়ারিতে অযোধ্যায় ১ হাজার ৮০০ কোটি রূপি খরচ করে তৈরি করা রামমন্দিরটি উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই অযোধ্যায় রামমন্দির তৈরির দাবি তুলে ১৯৯০ সালে জাতীয় রাজনীতিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির দল বিজেপির উত্থান হয়।
গোটা দেশজুড়ে বড় পর্দায় এই অনুষ্ঠান দেখানো হয়েছিল। বিরোধীরা অভিযোগ করেছিলেন, রামমন্দির উদ্বোধনের নামে যা হচ্ছে, তা ধর্ম নয়, বরং পুরোটাই রাজনীতি। অবশেষে সেই অযোধ্যাতেই হার স্বীকার করতে হল বিজেপিকে।
যেখানে রামমন্দিরটি তৈরি করা হয়েছিল সেখানে ছিল ষোড়শ শতকের একটি মসজিদ। তবে উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা ১৯৯২ সালে মসজিদটি ভেঙে ফেলে। তাদের দাবি ষোড়শ শতকে মন্দির ভেঙে এখানে মসজিদ তৈরি করা হয়েছিল। এই দাবি তুলে তারা মসজিদটি গুঁড়িয়ে দেয়। যা নিয়ে সেখানে দাঙ্গার সৃষ্টি হয়েছিল।
যেখানে মন্দিরটি তৈরি করা হয়েছে সেটির জায়গা নিয়ে হিন্দু আর মুসলমানদের মধ্যে দীর্ঘদিন বিবাদ চলে আসছিল। এরপর ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০১৯ সালে দেওয়া এক রায়ে জমিটির মালিকানা হিন্দুদের দিয়ে দেয়। যদিও সর্বোচ্চ আদালত এটাও স্পষ্ট করে বলেছিল যে মসজিদ ধ্বংস করাটা ছিল ‘আইনের শাসনের জঘন্য লঙ্ঘন।’