রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলায় শিক্ষা গত ১৫ বছরে ব্যাপক অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। মোট ১,৫৫৭টি সরকারি ও বেসরকারি উভয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রায় ৩,৫৬০.৭২ কোটি টাকা ব্যয়ের প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হচ্ছে, এর মধ্যে ৯২৭.৪৮ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ৮৬৪টি প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের (ইইডি) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলতাফ হোসেন বলেন, তারা ৩৬২টি নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বহুতল ভবন সম্প্রসারিত করেছে এবং ৫৪টি অন্যান্য বিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।
তিনি বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সহায়তায় শিক্ষার মান উন্নয়ন নিশ্চিত করতে তারা নির্বাচিত বেসরকারি কলেজগুলোতে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণ করেছেন। এছাড়া ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের (আইডিবি) আর্থিক সহায়তায় প্রায় ৫ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে ছয়টি মাদ্রাসায় শিক্ষার পরিবেশ উন্নয়নের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
৩৫১টি নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভবনের করার কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং ৩৯টির কাজ এগিয়ে চলছে। আটটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজ স্থাপন করা হয়েছে এবং আরও তিনটি উপজেলায় প্রায় ১৬৫.০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণকাজ চলছে। এখানে কারিগরি শিক্ষার প্রসারে প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক অবদান রাখবে।
দুটি কারিগরি স্কুল ও কলেজের সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজ সম্পন্ন হয়েছে এবং বর্তমানে আরও পাঁচটির অনুরূপ কাজ চলছে।
‘মাধ্যমিক শিক্ষা সেক্টর ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রাম’এর পক্ষ থেকে বিভাগে ৯৭টি প্রতিষ্ঠানকে উন্নীত করা হয়েছে এবং ২৪২টি মাদ্রাসাকে উন্নয়নের আওতায় আনা হয়েছে। দশটি সরকারি কলেজে বিজ্ঞান শিক্ষার পরিধি সম্প্রসারণ করা হয়েছে এবং আরও ১৭টি কলেজকে একই প্রক্রিয়ার আওতায় আনার কাজ চলছে।
মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে জেলা সদরের ২৭টি স্নাতকোত্তর কলেজের উন্নয়ন করা হয়েছে।
৫৪৩টি সরকারি-বেসরকারি কলেজে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে এবং ৩৯৮টি প্রতিষ্ঠানে একই কাজ এগিয়ে চলছে।
আটটি সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পাঁচতলা একাডেমিক ভবন নির্মাণ করা হয়েছে এবং আরও ২২টি বিদ্যালয়ে একই উচ্চতার ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।
রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল খালেক বলেন, বর্তমানে শহর ও গ্রামীণ উভয় ক্ষেত্রেই শিক্ষাগত অবকাঠামোর কোনো ঘাটতি নেই, যা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীসহ সংশ্লিষ্টদের খুশী করছে।
জেলার বাঘা উপজেলার চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট লায়েব উদ্দিন লাবলু বাসসকে বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে এ অঞ্চলের শহর ও গ্রামীণ উভয় এলাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ব্যাপক অবকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে।
গ্রামীণ এলাকায় অনেক স্কুল, মাদ্রাসা ও কলেজে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হয়েছে যা গ্রামীণ ও শহরের মধ্যে পার্থক্য কমাতে অনেক অবদান রেখেছে।
উপজেলা সদরে অবস্থিত সকল নির্বাচিত বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়কে মডেল স্কুলে রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে মেরামত, সংস্কার ও আসবাবপত্র সরবরাহের কাজ বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
অ্যাডভোকেট লায়েব লাবলু বলেন, বর্তমানে প্রত্যন্ত অঞ্চলে মাটির দেয়াল বা টিনশেড ভবনের কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, এটি বর্তমান সরকারের একটি বড় অর্জন এবং সরকারের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাতে হবে।
তবে তিনি বলেন, সময় এসেছে সব প্রতিষ্ঠানে সমানভাবে শিক্ষার মান নিশ্চিত করার কারণ এটি দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
উন্নয়নকর্মী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, ‘শিক্ষার অবকাঠামোর খাতকে উন্নীত করার ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের অবদানকে অস্বীকার করার আর কোনো সুযোগ নেই’। তিনি জাতিগত সংখ্যালঘুর এবং গ্রামীণ জনগণের জীবন-জীবিকার অবস্থার উন্নয়নে কাজ করছেন। খবর বাসস।
তিনি বলেন, সামগ্রিকভাবে দায়িত্বশীল নাগরিক তৈরির জন্য শিক্ষা খাতের উন্নয়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ।