রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) থেকে ঋণ নেওয়ার সীমা কমিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে রিজার্ভের অর্থে গঠিত এই তহবিল থেকে আগের চেয়ে কম ঋণ পাবেন রপ্তানিকারকেরা।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বাংলাদেশকে যে ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দিয়েছে, তার শর্ত হিসেবে রিজার্ভের অর্থের প্রকৃত হিসাব করতে সুপারিশ করেছে তারা। এর অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে এই তহবিলের আকার ছোট করবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সে জন্য রপ্তানিকারকদের ঋণের সীমা ৫০ লাখ ডলার করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৯ এপ্রিল) বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রা নীতি বিভাগ এ নিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) ও বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএমএ) সদস্যরা দুই কোটি ডলার পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন। আগে এই ঋণের সীমা ছিল ২ কোটি ৫০ লাখ ডলার। বাংলাদেশ ডাইড ইয়ার্ন এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিডিওয়াইইএ) সদস্যরা ঋণ নিতে পারবেন সর্বোচ্চ এক কোটি ডলার। আগে তাঁদের ঋণের সীমা ছিল ১ কোটি ৫০ লাখ ডলার।
১৯৮৯ সালে ৩৮ লাখ ৭২ হাজার ডলার নিয়ে গঠিত ইডিএফের আকার ধীরে ধীরে বাড়িয়ে ৭ বিলিয়ন বা ৭০০ কোটি ডলারে উন্নীত করা হয়। তবে এখন এই ঋণের সীমা ৬ বিলিয়ন বা ৬০০ কোটি ডলারের বেশি উঠতে দিচ্ছে না কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
এদিকে ইডিএফের বিকল্প হিসেবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে ১০ হাজার কোটি টাকার রপ্তানি সহায়ক তহবিল গঠন করে বাংলাদেশ ব্যাংক। মূলত রিজার্ভের ডলার দিয়ে গঠিত রপ্তানি উন্নয়ন তহবিলের (ইডিএফ) ওপর চাপ কমাতে গঠন করা হয় কম সুদের এই রপ্তানি সহায়ক তহবিল। তবে গত তিন মাসে মূলত এই তহবিলের ঋণের সুবিধা নিয়েছেন তারল্য-সংকটে পড়া ছয় ব্যাংকের গ্রাহকেরা। সব মিলিয়ে এসব ব্যাংকের কাছে গেছে ২ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
এর মধ্যে পাঁচটিই ইসলামি ধারার ব্যাংক এবং একটি রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক। সেটি হলো জনতা ব্যাংক। ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো হলো ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেড, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকই তারল্য-সংকটে পড়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সম্প্রতি বিশেষ ব্যবস্থায় টাকা ধার নেয়। জনতা ব্যাংক প্রায় প্রতিদিনই কয়েক হাজার কোটি টাকা করে ধার করছে।
রপ্তানি সহায়ক তহবিল পরিচালনা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তহবিল থেকে ৪ শতাংশ সুদে টাকা নিয়ে রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল সংগ্রহ করতে পারছেন রপ্তানিকারকেরা।
তবে ইডিএফের ঋণ দেওয়া হয় ডলারে, আর রপ্তানি সহায়ক তহবিলের ঋণ দেওয়া হয় টাকায়।