সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদের নির্বাচনের জন্য প্রার্থী হিসাবে আবেদন করেছেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বেশ কয়েকটি মামলায় অভিযুক্ত ইমরান এখন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি। তবে কারাগার থেকেই এই নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন তিনি।

কেন ইমরান খান হঠাৎ অক্সফোর্ডের আচার্য পদে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিলেন? এই বিষয়ে ইমরান খানের উপদেষ্টা জুলফি বুখারির সঙ্গে বিবিসি যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘ইমরান খান কেন ওই নির্বাচনে অংশ নেবেন না? এটি অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি পদ। উনি (ইমরান খান) অতীতে ব্র্যাডফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ছিলেন এবং তিনি অত্যন্ত সততার সঙ্গে সেই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। তাই তিনিই এই পদের (অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য) জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ব্যক্তি।’

তবে অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে কারাগারে দিনাতিপাত করা ইমরানের অক্সফোর্ডের আচার্য হওয়ার বাসনার মূলে আসলে কী উদ্দেশ্য রয়েছে, সে সম্পর্কে জানার চেষ্টা করেছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদে ইমরান খান নির্বাচিত হলে তা বেশ উল্লেখযোগ্য বিষয় হবে। একইসঙ্গে এর প্রভাব পড়বে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক স্তরেও। পাকিস্তানের রাজনীতিতে কোণঠাসা হয়ে পড়া ইমরানের জন্য নতুন আশার প্রদীপ হতে পারে অক্সফোর্ডের এই নির্বাচন।

পাকিস্তানের রাজনৈতিক বিরোধ নিয়ে লেখা ‘পলিটিক্যাল কনফ্লিক্ট ইন পাকিস্তান’ বইয়ের লেখক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ওয়াসিম বিবিসিকে বলেছেন, ‘এর আগেও এই পদে তার নিযুক্তির জন্য দুই থেকে তিনবার চেষ্টা করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে যদি ইমরান খান অক্সফোর্ডের মতো একটি নামি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য হন, তাহলে তার প্রতি অনেক সহানুভূতি তৈরি হবে।’

ইমরান অক্সফোর্ডের আচার্য নির্বাচিত হলে তখন পাকিস্তান সরকার তার ওপর দমনপীড়ন চালাতে পারবে না বলেও মনে করেন ওয়াসিম। কেননা তখন ইমরানের বিরুদ্ধে যেকোনো সিদ্ধান্ত ‘ব্রিটিশবিরোধী পদক্ষেপ’ হিসেবে বিবেচিত হবে। এছাড়া কারামুক্ত হয়ে ‘সম্মানজনকভাবে দেশ ছাড়ার’ জন্যও এটি ইমরান খানের কাছে একটি ‘ভালো সুযোগ’ হতে পারে বলে মনে করেন এই বিশ্লেষক।

এদিকে ইমরান খান ইস্যুতে পাকিস্তান এবং যুক্তরাজ্যের মধ্য কূটনৈতিক জটিলতারও ইঙ্গিত দিয়েছেন পাকিস্তানের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব শামশাদ আহমেদ খান, ‘পাকিস্তান সরকার যদি নির্বাচনের পরও ইমরান খানের পথ আটকানোর চেষ্টা করে এবং তাকে বাইরে যেতে না দেয়, তাহলে তা কূটনৈতিক জটিলতা তৈরি করতে পারে।’

যদিও ড. ওয়াসিম ও পাকিস্তানের সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল বাসিত এই ধারণার সঙ্গে একমত নন। নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তির কারণে পাকিস্তানের সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কে বড় ধরনের চিড় ধরার সম্ভাবনা নেই বলেই মত তাদের।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *