মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন টানাপোড়েন নেই। গণমাধ্যম এটিকে বাড়িয়ে অপপ্রচার করে থাকে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন।
মঙ্গলবার পররাষ্ট মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন এসব কথা বলেন। ড. এ কে মোমেন বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বহুমাত্রিক। সেই কারণে যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে আমাদের কোন অস্বস্তি নেই। ভবিষ্যতে দেশটির সঙ্গে আমরা একটা ভালো সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করছি। কারণ নির্বাচন নিয়ে মার্কিনিদের চাওয়ার সাথে আমাদের মিল আছে। আমরাও একটি সহিংসতামুক্ত, শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাই। সব দেশই কেনা-বেচা করতে চায়। কখনও কখনও এটি একেবারে পীড়াপিড়ীর পর্যায়ে চলে যায়। তবে আমরা এতে মাইন্ড করি না।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন আয়োজনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেই লক্ষ্যেই নির্বাচন কমিশন কাজ করছে। এবারের নির্বাচনে নির্বাচনে মোট ২৮টা দল নির্বাচনে অংশ। তাই আর যদি কেউ নাও আসে তাহলে খুব একটা ক্ষতি হবে না। জনগণ ভোট দিলেই একে গ্রহণযোগ্য বলা যায়।
মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং ৭ জানুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নাগরিক পরিসর সংকুচিত হওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মানবাধিকার নিয়ে কাজ করা বিশ্বের ছয়টি সংগঠন। রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটসের (আরএফকেএইচআর) ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ড. মোমেনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন সাংবাদিকরা।
জবাবে মোমেন বলেন, আমরা কোনো বিরোধী দলকে হয়রানি করছি না, নির্যাতন করছি না। আমরা যারা সন্ত্রাসী, যারা মানুষের বাড়ি-ঘর জ্বালায়, জনগণের সম্পত্তি; বিশেষ করে, বাস, ট্রেন, ট্রাক জ্বালায়ৃ। যারা মানুষকে মারছে তাদের আমরা শাস্তির আওতায় নিচ্ছি। আমরা কোনো রাজনৈতিক কারণে কাউকে হয়রানি করছি না। আমরা যাদের গ্রেপ্তার করছি তারা হচ্ছে-সন্ত্রাসী।
ড. মোমেন বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তুলনা করলে দেখা যায় বাংলাদেশ মানবাধিকার রক্ষায় আর্দশ দেশ হিসেবে কাজ করছে। এই দেশে কাউকে রাজনৈতিক হয়রানি করা হয় না। বিরোধীদের হামলা, মামলাসহ অপরাধ কর্মকান্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখে তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্রের বোয়িং বিমান বিক্রির প্রস্তাব আছে। আর বাংলাদেশেরও এয়ারবাসের সংকট আছে। আমরা এখন এয়ারবাসের বৈচিত্র্য আনতে চাচ্ছি। ফ্রান্সের কাছে প্রস্তাবিত কিনতে চাওয়া ১০টা এয়ারবাসের মধ্যে ২টা কার্গো। ড. মোমেন বলেন, এখন যুক্তরাষ্ট্র আরও সস্তায় বোয়িং বিক্রি করতে চাচ্ছে। কেনা-বেচা একটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। দেশটি বোয়িং কিনতে অনুরোধ করছে কিন্তু সেটি কোনভাবেই চাপ নয়। তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে এয়ারবাস কেনা নিয়ে ফ্রান্সের সঙ্গে কথা হয়েছে। একটি মৌখিক প্রস্তুতিও রয়েছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এখন পর্যন্ত সঠিকভাবে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন বাস্তবায়ন না হওয়া বড় ব্যর্থতা। তবে বিশ্বাস করি কোন একটা সময় এই মানুষগুলো নিজেদের দেশে ফেরত যাবে। শুরুতেই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পাইলট প্রকল্প নিয়ে আশাবাদী ছিলাম। কিন্তু একটা সময় বিদেশী শক্তি বাধা দিয়ে নিজ দেশে তাদের ফেরত নিতে চাইলো। তবে নির্বাচনের আগে তাদের পাঠানোর সুযোগ নেই।