সময় যত যাচ্ছে তত বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা।’ কতটা শক্তি নিয়ে মোখা উপকূলে আঘাত হানবে বা মোখার গতিপথ একইরকম থাকবে কি না তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে এটি ১৪ মে (রোববার) বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে বলে এখন পর্যন্ত জানা গেছে।
২০০৭ সালের সিডরের মতো মোখাও যে সুপার সাইক্লোনে পরিণত হবে না, সে কথাও এখনও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম শুরু করলেও এর প্রভাব পড়ছে না খাগড়াছড়িতে। আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হলেও সেখানে যাচ্ছেন না স্থানীয়রা।
ঘূর্ণিঝড় মোখার কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া আকারে ২১৫ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। রোববার (১৪ মে) সকালে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ১৮ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত ঘোষণার পরও চুরির ভয়ে কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছেন উপকূলের মানুষ। তবে প্রশাসন বাধ্য করে মাত্র ১০ হাজার মানুষকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পেরেছে। গবাদিপশু নিয়ে পাহাড়ি এলাকার আশ্রয়কেন্দ্র ও আত্মীয় ও স্বজনদের বাড়িতে নারীরা আশ্রয় নিলেও ঘর পাহারা দিচ্ছেন পুরুষ।
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে সম্ভাব্য জলোচ্ছ্বাসের পানি যাতে ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য কর্ণফুলী টানেলের ‘ফ্লাড গেট’ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে নানা সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাব রাত থেকেই সেন্টমার্টিনে পড়তে শুরু করেছে। সেন্টমার্টিনের ঘাট এলাকায় বাতাসের গতিবেগ বেড়েছে, সঙ্গে রয়েছে গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি।
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগের প্রভাবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনে ঝোড়ো বাতাস বইতে শুরু করেছে। এছাড়া ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলের দিকে অগ্রসর হওয়ায় সেন্টমার্টিনে বৃষ্টি হচ্ছে। তাছাড়া এর প্রভাবে সাগর বেশ উত্তাল রয়েছে।
পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় মোখা রোববার (১৪ মে) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টার মধ্যে উপকূলে আঘাত হানতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৪১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড় মোখা। তাছাড়া চট্টগ্রাম ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকায় অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ের অগ্রভাগের প্রভাব শুরু হয়েছে।