প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্সে আবারও বড় প্রবৃদ্ধি হয়েছে। সদ্য বিদায়ী মে মাসে বৈধ পথে দেশে আসা প্রবাসী আয় ২ বিলিয়ন বা ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। প্রবাসী আয়সংক্রান্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ১ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত দেশে বৈধ পথে প্রবাসী আয় এসেছে ২১৪ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১৫৫ কোটি ডলার। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৫৯ কোটি ডলার বা প্রায় ৩৮ শতাংশ। এ নিয়ে পরপর দুই মাস দেশে আসা প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলারের ওপরে রয়েছে। গত এপ্রিলে বৈধ পথে দেশে প্রবাসী আয় এসেছিল ২০৪ কোটি ডলার।
ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারের দাম একলাফে ৭ টাকা বাড়ানোর পর প্রবাসী আয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। গত ৮ মে ডলারের বিনিময় মূল্য নির্ধারণে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই পদ্ধতি চালু করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ডলারের বিপরীতে টাকার বড় ধরনের অবমূল্যায়ন করে। ক্রলিং পেগ পদ্ধতির আওতায় ডলারের মধ্যবর্তী একটি দাম নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে এই দরের আশপাশে স্বাধীনভাবে লেনদেন করতে বলেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মধ্যবর্তী এই দর নির্ধারণ করা হয়েছে ১১৭ টাকা। তার আগে ব্যাংক খাতে প্রতি ডলারের বেঁধে দেওয়া দাম ছিল ১১০ টাকা। ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালুর পর একলাফে প্রতি ডলারের দাম ৭ টাকা বেড়ে যায়। বৈধ পথে ডলারের ভালো দাম পাওয়ায় প্রবাসীরা ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় পাঠানো বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক মে মাসের প্রবাসী আয়ের যে হিসাব দিয়েছে, সেটি ২৯ মে, বুধবার পর্যন্ত। এরপর গত বৃহস্পতিবার লেনদেন চালু ছিল ব্যাংকে। ওই দিন ব্যাংকের মাধ্যমে আসা প্রবাসী আয়ের হিসাব যুক্ত হলে তাতে মে মাসে আসা আয় আরও বাড়বে। তাই চূড়ান্ত হিসাবে মে মাসে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ২২০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেটি হলে চলতি ২০২৩–২৪ অর্থবছরের মধ্যে একক মাস হিসেবে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় আসার রেকর্ড হবে মে মাসে। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ প্রবাসী আয় এসেছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। ওই মাসে দেশে আসা প্রবাসী আয়ের পরিমাণ ছিল ২১৬ কোটি ডলার।
এদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে ২৯ মে পর্যন্ত দেশে মোট প্রবাসী আয় এসেছে ২ হাজার ১২৬ কোটি ডলার। ২০২২–২৩ অর্থবছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯২৭ কোটি ডলার। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরের উল্লেখিত সময়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে ১৯৯ কোটি ডলার, এ ক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি প্রায় সাড়ে ১০ শতাংশ।