নভেম্বর ২৫, ২০২৪

দেশের পুঁজিবাজারে প্রকৌশল খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের চার পরিচালকের শেয়ার স্থানান্তরের জন্য তিন মাস সময় পেয়েছে মেহমুদ ইক্যুইটিজ লিমিটেড। কয়েকটি সমস্যার কারণে নির্দিষ্ট সময়ে শেয়ার কেনা সম্পন্ন করতে পারেনি মেহমুদ ইক্যুইটিজ। আবেদন জানালে তিন মাস সময় বাড়ায় পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

সম্প্রতি এ বিষয়ে কোম্পানি দুটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠি ইস্যুর তিন মাসের মধ্যে তিন ধাপে শেয়ার কেনা সম্পন্ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সেই সঙ্গে বিষয়টি ঢাকা ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই-সিএসই) এবং সেন্ট্রাল ডিপোজেটরি অব বাংলাদেশের (সিডিবিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালককেও অবহিত করা হয়েছে।

এর আগে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের মালিকানা পরিবর্তনে কোম্পানিটির ‘গ্রুপ বি’ শেয়ারধারী চার পরিচালকের শেয়ার কেনার অনুমোদন দেওয়া হয় মেহমুদ ইক্যুইটিজকে। চার শেয়ারধারী পরিচালকের ১০ শতাংশ শেয়ার কিনতে প্রতিষ্ঠানটিকে এ অনুমোদন দেয় বিএসইসি। এর মাধ্যমে মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের একাধিক পরিচালক পদ নেওয়ার পাশাপাশি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনার দায়িত্বও পাবে মেহমুদ ইক্যুইটিজ।

শেয়ার স্থানান্তরের অনুমোদন দেওয়া ও সময় বাড়ানোর আবেদনের বিষয়ে বিএসইসির দেওয়া চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, এর আগে ক্রেতা মেহমুদ ইক্যুইটিজ এবং বিক্রেতা মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজের চার শেয়ারহোল্ডার উভয় পক্ষকেই শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে মেহমুদ ইক্যুইটিজের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তিনটি ধাপে শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন করতে হবে। চিঠি ইস্যু করার তারিখ থেকে তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন করার নির্দেশ দিয়েছে বিএসইসি।

এদিকে, মেহমুদ ইক্যুইটিজের আবেদনে বলা হয়েছে, মিরাকলের চার শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে মেহমুদ ইক্যুইটিজের শেয়ার কেনার অনুমোদন দেওয়ার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু, শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন না হওয়ায় কোম্পানি দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, চিঠিতে উল্লেখিত কারণগুলোর জন্য সম্পন্ন করা সম্ভব হয়নি। যে কারণে সম্ভব হয়নি, সেগুলো হলো—এই ধরনের শেয়ার স্থানান্তর করার জন্য প্রয়োজনীয় সফ্টওয়্যার না থাকায় ডিএসই শেয়ার স্থানান্তর করতে অস্বীকার করেছে। মিরাকলের চার শেয়ারহোল্ডার একবারে সব শেয়ার সংশ্লিষ্ট ব্রোকারেজ হাউসে আগে থেকে রাখতে পারেনি। কারণ, শেয়ারগুলো একটি ব্যাংক বা সমবায় ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা হয়েছে, যা শেয়ার কেনার সময় মেহমুদ ইক্যুইটিজের জানা ছিল না ৷

শেয়ার স্থানান্তর তিনটি ধাপে সম্পন্ন করা যেতে পারে, উল্লেখ করে কোম্পানি জানায়, প্রথম ধাপে বিএসইসি সময় বাড়ানোর পর মিরাকলের চার শেয়ারহোল্ডারের যে ২০ লাখ ২২ হাজার ৯০০ শেয়ার স্থানান্তরের জন্য ব্রোকারেজের কাছে আছে, সেগুলো স্থানান্তর করা। দ্বিতীয় ধাপে মিরাকলের চার শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে যে শেয়ারহোল্ডারের ১০ লাখ শেয়ার ব্যাংকে বন্ধক আছে, সেই শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন করা হবে। ইতোমধ্যে সেই শেয়ারের বিষয়ে ব্যাংক থেকে একটি এনওসি পাওয়া গেছে বলে জানানো হয়। সবশেষে তৃতীয় ধাপে চার শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে এক শেয়ারহোল্ডারের যে ৫ লাখ শেয়ার সমবায় ব্যাংকের কাছে বন্ধক আছে, সেই শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন করা। তাই, শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন করার জন্য তিন মাস সময় দেওয়ার জন্য আবেদন জানায় মেহমুদ ইক্যুইটিজ।

এর মধ্যে বিএসইসির অনুমোদনের পর গত ১০ মে পুনরায় ২০ লাখ ২২ হাজার ৯০০ শেয়ার স্থানান্তরের ঘোষণা দেয় মিরাকলের চার শেয়ারহোল্ডার। পরে ১৭ মে শেয়ার স্থানান্তর সম্পন্ন হয়েছে বলে স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে জানায় তারা।

প্রসঙ্গত, গত বছর ২৩ মে বিএসইসি শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (উল্লেখযোগ্য সংখ্যক শেয়ার অর্জন, অধিগ্রহণ ও কর্তৃত্ব গ্রহণ) বিধিমালা, ২০১৮ এর পরিচালকদের এই শেয়ার স্থানান্তরের অনুমোদন দেওয়া হয়।

কোম্পানিটি ২০০০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানিটির অনুমদিত মূলধন ৫০ কোটি টাকা এবং পরিশোধিত মূলধন ৩৫ কোটি ২১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির মোট ৩ কোটি ৫২ লাখ ১৮ হাজার ৫৭ টি শেয়ারের মধ্যে ৩০ শতাংশ উদ্যোক্তা ও পরিচালক এবং ৭০ শতাংশ সাধারণ শেয়ারহোল্ডারদের কাছে আছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...