বর্তমানে মিয়ানমারের প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা নাগরিক বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। এমন অবস্থায় দেশটি থেকে আগামীতে রোহিঙ্গা বা যেই আসুক, কাউকে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসের বাংলাদেশ পুলিশ অডিটোরিয়ামে হাইওয়ে পুলিশের ‘সেবা সপ্তাহ-২০২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশে পালিয়ে আসা মিয়ানমারের সেনাবাহিনী, সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি), পুলিশ, ইমিগ্রেশনসহ বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের দুই একদিনের মধ্যেই সমুদ্রপথে ফিরিয়ে নেওয়া হবে। মিয়ানমারের সঙ্গে আমাদের কোনো কনফ্লিক্ট নেই, যুদ্ধ নেই। তারা আত্মরক্ষার্থে এখানে এসেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু আমাদের দিকে নয়, মিয়ানমারের চতুর্দিকে বিভিন্ন গ্রুপের সব সময়ই যুদ্ধবিগ্রহ লেগে আছে। আমাদের বাংলাদেশ অংশেও তাদের আরাকান আর্মির সঙ্গে যুদ্ধ চলছে। আমরা দেখছি যুদ্ধটা এতই তীব্র হয়েছে, মিয়ানমারের যেই বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) রয়েছে এবং সেখানকার কর্মকর্তা যারা ছিল, সেনাবাহিনীর সদস্যরাও যারা ছিল, তারা কেউ অস্ত্র নিয়ে কেউ অস্ত্র ছাড়া ঢুকেছে। তাদের জীবন রক্ষার জন্য, যুদ্ধের জন্য ঢোকেনি। যুদ্ধে তাদের জীবন রক্ষার জন্য আমাদের দেশে প্রবেশ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের বিজিবি তাদের অস্ত্রগুলো রেখে আটক অবস্থায় রেখেছে। যারা আহত ছিল, তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিয়েছে। আমরা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানিয়েছি তাদের ফেরত নেওয়ার জন্য। তারা বলেছে খুব শিগগিরই জাহাজযোগে তারা নিয়ে যাবে। সেজন্য আমাদের কাছে বার্তা পাঠিয়েছে। আমরা মনে করি দুই-এক দিনের মধ্যেই তাদের ফেরত নিয়ে যাবে। এখানে আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই, কোনো রকম যুদ্ধ আমাদের সঙ্গে নেই। তারা আত্মরক্ষার্থে, জীবন রক্ষার্থে এখানে আশ্রয় নিয়েছে।’
এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছি, এমনিতেই ১২ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের এখানে রয়েছে। কাজেই রোহিঙ্গা না অন্য কেউ যেই আসুক মিয়ানমার থেকে, আমরা কাউকে আর এখানে স্থায়ী হতে দেব না। তারা যদি আত্মরক্ষার্থে আসে, তাদের সরকারকে বলেছি নিয়ে যেতে, তারা নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের বিজিবি, কোস্ট গার্ড অতন্দ্র প্রহরীর মতো কাজ করছে। আমাদের সীমানায় আর আসবে বলে মনে হচ্ছে না।’
বিজিপি সদস্যদের যাঁরা আশ্রয় নিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণে তাঁদের কেউ জড়িত ছিলেন কি না, জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাছে এ ধরনের কোনো লিস্ট নেই। তবে আমরা সে সময় দেখেছি মাইলের পর মাইল পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নদীতে লাশ ভেসে আসতে দেখেছি। সেখানে যে গণহত্যা চালাতে আমরা দেখেছি, সে সময় তাদের আর্মি দাঁড়ানো ছিল। তবে তারাই গণহত্যা করেছে কি না, জানি না। আন্তর্জাতিক আদালতে এটার বিচার চলছে।’