ভারত নিয়ে আশার কথা শোনাল বিশ্বব্যাংক , দুর্ভিক্ষের বছরেও করবে বাজিমাত।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক স্পষ্ট জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মন্দায় অন্য দেশগুলির তুলনায় ভারতের উপর অনেক কম প্রভাব পড়েছে। অন্যান্য উদীয়মান অর্থনীতির তুলনায় ভারতের অবস্থান অনেক ভাল রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছে, এই পরিস্থিতিতেও ভারতের আর্থিক বৃদ্ধিতে ‘ইতিবাচক সম্ভাবনা’ রয়েছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে ‘ইন্ডিয়া ডেভেলপমেন্ট আপডেট’। এখানে পূর্বাভাস করা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৬.৯ শতাংশ হতে পারে। অক্টোবরে প্রকাশিত রিপোর্টে যা ৬.৫ শতাংশ হতে পারে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছিল। যদিও তার আগের রিপোর্টে সংখ্যাটা আরও বেশি ছিল। জুনে গ্লোবাল ইকনমিক প্রসপেক্টস সংক্রান্ত যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল বিশ্বব্যাংক, সেখানে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭.৫ শতাংশ দাঁড়াতে পারে বলে বলা হয়েছিল। অক্টোবরের পূর্বাভাসে তা ১ শতাংশ কমে গেলেও এ বার আবার ০.৪ শতাংশ বেড়েছে!
প্রসঙ্গত, প্রায় চার বছর আগেও ভারতকে সুখবর শুনিয়েছিল বিশ্বব্যাংক। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে প্রকাশিত ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, পরবর্তী কয়েক বছরের মধ্যে আর্থিক বৃদ্ধিতে চিনকে ছাপিয়ে যাবে ভারত। বিশ্বব্যাংকের এক অর্থনীতিবিদ বলেছেন– দশ বছর আগের তুলনায় ভারত এখন অনেক শক্তিশালী। গত এক দশকের বিভিন্ন আর্থিক পদক্ষেপ ভারতকে বিশ্ব অর্থনীতির প্রথম সারিতে নিয়ে এসেছে!
যদিও মূল্যবৃদ্ধি ঘিরে বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস দুশ্চিন্তা কমাচ্ছে না। বলা হয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৭.১ শতাংশে পৌঁছতে পারে। উচ্চ মূল্যস্ফীতির জেরে আমেরিকা ও ইউরোপের অনেক দেশে আবারও মন্দার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে মূল্যস্ফীতির হার ১০ শতাংশ ছাড়িয়েছে।
তবে বাংলাদেশিরাও হেরে যাওয়ার জাতি নয়। জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃর্ত্বে স্বাধীনতা পাওয়া এই জাতি শত বাধা উপেক্ষা করে এগিয়ে যাচ্ছে। বৈশ্বিক করোনা মহামারীতে দেশটির অথনীতির অগ্রযাত্রা চমকে দিয়েছে বিশ্বকে। অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে সদ্য শেষ হওয়া নভেম্বর মাসে ৫০৯ কোটি ২৫ লক্ষ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছেন রপ্তানিকারকরা। এই অঙ্ক গত নভেম্বরের থেকে ২৬ শতাংশ বেশি। টাকার অংকের যার পরিমান ৫১ হাজার কোটি টাকা। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় তছনছ হয়ে যাওয়া বিশ্ব অর্থনীতিতে সবাইকে অবাক করে দিয়ে পণ্য রপ্তানিতে নতুন ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্যে এক মাসে ৫ বিলিয়ন (৫০০ কোটি) ডলার আয়ের মাইলফলক অতিক্রম করেছে।
তবে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশটিকে বার বার পিছিয়ে দিচ্ছে। ভূ রাজনৈতিক অস্থিরতার থেকে অভ্যন্তরীণ অস্থিরতাকে বেশি দায়ী করা হয়। তৃতীয় পক্ষের রাজনৈতিক ফাঁদে পাঁ দিয়ে দেশের অর্থনীতির অগ্রযাত্রাকে বার বার ক্ষতিগ্রস্থ করছে দেশটির জনসংখ্যার একাংশ।
সকল খাতে উন্নয়নের চিত্র দৃশ্যমান হলেও পুঁজিবাজারের নাজেহাল অবস্থা অস্বীকার করার সুযোগ নেই। হাজার চেষ্টা করেও দেশের জনগণকে পুঁজিবাজার মুখী করতে পারছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। ঘন ঘন বিনিয়োগকারীদের সাথে প্রতারণার , বিনিয়োগের সুরক্ষা নিচ্চিত করতে না পারায় পুঁজিবাজারের এই করুন দশার মূল কারণ হিসেবেই দায়ী করছেন দেশটির বিনিয়োগকারীরা।
দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে আগামী বছর ভারত তেল রপ্তানি করবে বাংলাদেশকে। ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক একেবারে নিখাদ, অকৃত্রিম। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাত ধরে সৃষ্টি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের সোনালি অধ্যায় চলছে এবং বন্ধুত্ব আগামীতেও অটুট থাকবে ।
সোনালি চক্রবর্তী
বাঁকুড়া , পশ্চিমবঙ্গ