

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের মামলায় বাংলাদেশে ২২ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত প্রশান্ত কুমার হালদারকে (পি কে) জামিন দিয়েছেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গের আদালত।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) কলকাতার সিবিআই আদালতের বিচারক ১০ লাখ টাকার (১৫ লাখ রুপি) বন্ডের বিনিময়ে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
ভারতের দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা ইডির (প্রবেশন পরিদপ্তর) আইনজীবী অরিজিৎ চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশে পি কে হালদার দণ্ডপ্রাপ্ত হলেও সংশ্লিষ্ট নথিপত্র আদালতে উপস্থাপন করতে না পারার কারণে বিচারক তাকে জামিন মঞ্জুর করেন।
পি কে হালদারের আইনজীবী বিশ্বজিৎ মান্না আদালতে যুক্তি দেন, তার মক্কেল ইতোমধ্যে সাজার এক-তৃতীয়াংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, যা ভারতের আইনি কাঠামো অনুযায়ী জামিন পাওয়ার যথেষ্ট কারণ।
পি কে হালদার ছাড়াও তার দুই ভাগনে স্বপন মিস্ত্রি ও উত্তম মিস্ত্রিও জামিন পেয়েছেন। এর আগে কলকাতা হাইকোর্ট থেকে তার আরও দুই সহযোগী ইমন হালদার ও সরমি হালদার জামিন পেয়েছিলেন।
গত বছরের ৮ অক্টোবর অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পি কে হালদারকে ২২ বছরের কারাদণ্ড দেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০-এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
এর মধ্যে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অপরাধে ১০ বছর ও অর্থ পাচারের অপরাধের জন্য ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এই মামলার বাকি ১৩ আসামির সাত বছরের কারাদণ্ড হয়।
এর আগেই ভারতে পলাতক ছিলেন পি কে হালদার। পরে ২০২২ সালের ১৪ মে পশ্চিমবঙ্গের রাজারহাটের বৈদিক ভিলেজ, বোর্ড হাউস ১৫, গ্রিনটেক সিটি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ভারতে দুর্নীতি তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)।
পরে অশোকনগর থেকে তার ভাই প্রাণেশ হালদার, দুই ভাগনেসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার হওয়ার পর থেকে পি কে হালদার প্রেসিডেন্সি সেন্ট্রাল জেলে ছিলেন।
ইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, পি কে হালদার বাংলাদেশে সাজাপ্রাপ্ত হওয়ায় তার জামিনের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। তবে আইনজীবীদের মত অনুযায়ী, সাজার সময় পার হওয়ার যুক্তিতে তিনি ভারতের আইনের আওতায় জামিন পান।
পিকে হালদারসহ ২৩ জনের নামে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদনপিকে হালদারসহ ২৩ জনের নামে দুদকের অভিযোগপত্র অনুমোদন ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৪৭৯ ধারা (আগের অর্থ পাচার পাচার সংক্রান্ত আইন–২০০২ বা পিএমএলএ) অনুযায়ী ভারতে তাদের বিচার চলছে। ওই আইনে মোট সাজার এক-তৃতীয়াংশ সময় কারাভোগের পর দণ্ডপ্রাপ্তরা জামিনের যোগ্য হন।
পি কে হালদারসহ গ্রেপ্তারকৃতরা মোট সাজার এক-তৃতীয়াংশ সময় ইতোমধ্যেই বিচারাধীন অবস্থায় কারাগারে অতিবাহিত করেছেন। তাই তাদের জামিন দিয়েছেন আদালত।