শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার, রাজনীতি-অর্থনীতির পাশাপাশি যাদের সামনে রয়েছে কূটনৈতিক নানা চ্যালেঞ্জও। এর মধ্যে অন্যতম প্রতিবেশী দেশ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়টি। অনেকের মতে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ঢাকা-নয়াদিল্লির সম্পর্কে কিছুটা টানাপোড়েন সৃষ্টি হয়েছে। এ নিয়ে জার্মান সংবাদমাধ্যম ডয়চে ভেলের (ডিডব্লিউ) সঙ্গে কথা বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ডয়চে ভেলে জানিয়েছে, শেখ হাসিনা প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রশ্নে ড. ইউনূস বলেছেন, ‘নয়াদিল্লির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা ছাড়া ঢাকার কোনো বিকল্প নেই।’
জার্মান এই সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা বলেন,
নিজেদের প্রয়োজনেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সর্বোত্তম সম্পর্ক থাকতে হবে।
ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে সামরিক হেলিকপ্টারে করে ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। প্রতিবেদন মতে, নয়াদিল্লি এখনও হাসিনার অবস্থান সম্পর্কে বিশদ বিবরণ দেয়নি। যদিও তিনি একটি ‘নিরাপদ জায়গায়’ রয়েছেন বলে ধরাণা করা হয়।
ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার এরমধ্যেই শেখ হাসিনার কূটনৈতিক পাসপোর্ট প্রত্যাহার করেছে। এদিকে তাকে দেশে ফিরিয়ে (প্রত্যর্পণ) এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবিও জোরালো হচ্ছে।
তবে সাবেক কূটনীতিক এবং শিক্ষাবিদরা ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, ঢাকা শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে দেয়ার আবেদন করলেও, তা প্রত্যাখ্যান করতে পারে নয়াদিল্লি।
ডিডব্লিউ’র সঙ্গে আলাপকালে পানি বণ্টন এবং আন্তঃসীমান্ত চলাচলের মতো অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক সমস্যার দিকেও ইঙ্গিত করেছেন ড. ইউনূস। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য তার প্রশাসন নয়াদিল্লির সঙ্গে একসাথে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে এবং সমস্যা সমাধানের আন্তর্জাতিক উপায় রয়েছে। আমরা সেই পথ অনুসরণ করব এবং শান্তিপূর্ণভাবে এর সমাধান করব।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় সব প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন’ এবং এ কারণে ‘অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে’ উল্লেখ করে ৮৪ বছর বয়সী এই নেতা আরও বলেন, কোথা থেকে শুরু করবেন সেটি নির্ধারণ করাই কঠিন, কারণ সবকিছু নতুনভাবে শুরু করতে হবে। আমরা (অন্তর্বর্তী সরকার) নাগরিক অধিকার, মানবাধিকার, গণতন্ত্র এবং সুশাসনের সঙ্গে যা কিছু যায়, তার সবকিছু প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সংবিধান সংশোধনের ইঙ্গিতও দেন প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, ‘আমাদের সংবিধানের প্রধান বিষয়গুলোর ওপর নজর দেয়া এবং একটি ঐকমত্য তৈরি করা উচিত। আমরা ঐকমত্য ছাড়া কিছু করতে পারি না, কারণ এটিই আমাদের শক্তি।’