বিশ্বকাপে উড়তে থাকা ভারতের মুখোমুখি হচ্ছে কাল বাংলাদেশ। পুনেতে মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন (এমসিএ) স্টেডিয়ামে আসরের চতুর্থ ম্যাচে শক্তিশালী ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৬ উইকেটের জয় দিয়ে বিশ্বকাপ শুরু করে বাংলাদেশ। কিন্তু এরপরের দুই ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে ১৩৭ রানে এবং নিউজিল্যান্ডের কাছে ৮ উইকেটে হেরে যায় টাইগাররা।
অপরদিকে, নিজেদের প্রথম তিন ম্যাচে দুর্দান্ত জয় তুলে নিয়েছে ভারত। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৬ উইকেটে জয় দিয়ে বিশ^কাপ শুরুর পর আফগানিস্তানকে ৮ উইকেটে এবং চিরপ্রতিন্দ্বন্দি পাকিস্তানকে ৭ উইকেটে হারায় টিম ইন্ডিয়া।
কাগজে-কলমে এবং সাম্প্রতিক পারফরমেন্স বিবেচনায় বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচে ফেভারিট ভারতই। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে উপমহাদেশীয় প্রতিদ্বন্দিদের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলার কারণে আত্মবিশ্বাসী থাকবে বাংলাদেশ।
দুই দলের মধ্যকার সর্বশেষ চার ম্যাচের মধ্যে তিনটিতে জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে আছে বিশ্বকাপের আগ মুর্হূতে শ্রীলংকার মাটিতে এশিয়া কাপের একটি ম্যাচও। ২০১৯ বিশ্বকাপের পর মাত্র চারবার মুখোমুখি হয়েছে দু’দল।
২০০৭ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে অসাধারণ জয়ের পর থেকে বিশ্বের যে কোন প্রান্তে যে কোন ম্যাচে টিম ইন্ডিয়ার সাথে খেলতে নামলেই উজ্জীবিত হয়ে উঠে বাংলাদেশ। এমন নয় সব ম্যাচেই জয় পেয়েছে তারা। কিন্তু প্রতিটি ম্যাচেই ভারতকে চাপে রাখতে সক্ষম হয়েছে টাইগাররা।
বিশ্বকাপে চারবার মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এরমধ্যে ভারতের জয় তিনটিতে। ২০০৭ সালের বিশ্বকাপের পর তামিম ইকবাল, সাকিব আল হাসান, মুশফিকুর রহিমের মতো তারকাদের উথানের পরও এই মেগা ইভেন্টে ভারতকে কখনো হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
তবে এখনও বাংলাদেশিদের বিশ্বাস- পেসার রুবেল হোসেনের ডেলিভারিতে রোহিত শর্মার কট আউটকে আম্পায়ার ‘নো বল’ না দিলে ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি জিততো টাইগাররা।
‘নো বল’ ইস্যুটি বাংলাদেশি ভক্তদের হৃদয়ে এখনও দাগ কেটে আছে এবং দুই দেশের ভক্তদের মধ্যে বেশ কয়েকবারই এটি নিয়ে বাকবিতান্ডা হয়েছে। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপেও ভারতকে চেপে ধরেছিল বাংলাদেশ। অবশ্য ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ২৮ রানে হেরে যায় টাইগাররা।
সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করে খেলার পাশাপাশি প্রতিন্দ্বন্দিতপূর্ণ ক্রিকেটের কারনে বিশ্বকাপের আয়োজক টিম ইন্ডিয়ার বিপক্ষে বাংলাদেশ নিজেদের সেরাটা দিতে কোন কার্পন্য করবেনা বলেই বিশ্বাস । কেননা জয় দিয়ে ঘুড়ে দাঁড়াতে মুখিয়ে আছে বাংলাদেশ। খবর বাসস।
এখন পর্যন্ত ৪০ ওয়ানডেে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এরমধ্যে বাংলাদেশের জয় ৮টিতে এবং হার ৩১টিতে। একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত হয়।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে পেশীর ইনজুরিতে পড়েছিলেন বাংলাাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। তার এমন ইনজুরিতে কিছুটা হলেও চিন্তিত ছিল বাংলাদেশ শিবির। তবে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচকে সামনে রেখে সাকিব অনুশীলনে ফেরায় পুরো আত্মবিশ^াসী থাকবে বাংলাদেশ। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচের মাত্র দু’দিন আগে নেটে ৪৫ মিনিট ব্যাট করে ম্যাচের দিন পুরোপুরি ফিট হয়ে ওঠারই ইঙ্গিত দিয়েছেন সাকিব।
এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে জয়ের ম্যাচে ব্যাট-বল হাতে দারুন পারফরমেন্সে ম্যাচ সেরা হন সাকিব। অন্যান্য প্রতিপক্ষের মতো বাংলাদেশকে হারানোটা সহজ হবে না ভারতের।
টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের ব্যাটাররা ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেলেও, সবচেয়ে বেশি হতাশা করেছে দলের পেসারদের পারফরমেন্স। গত দুই বছরের পারফরমেন্সে বাংলাদেশের পেসাদের নিয়ে অনেক বেশি প্রত্যাশা ছিলো। কিন্তু এখন অবধি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি তারা। তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, শরিফুল ইসলাম এবং এমনকি তরুণ তানজিদ হাসান সাকিবও ভারতকে বিপক্ষে ছন্দ খুঁজে পাবার আশায় আছেন। আগামীকালের ম্যাচে নিজেদের সেরাটা দেওয়ার আশায় আছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ দল : সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), নাজমুল হোসেন শান্ত (সহ-অধিনায়ক), লিটন দাস, তানজিদ হাসান, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান মিরাজ, নাসুম আহমেদ, মাহেদি হাসান, তাসকিন আহমেদ, মুস্তাফিজুর রহমান, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম ও তানজিম হাসান।
ভারত দল : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), হার্দিক পান্ডিয়া (সহ-অধিনায়ক), শুভমান গিল, বিরাট কোহলি, শ্রেয়াস আইয়ার, লোকেশ রাহুল, ঈশান কিশান, সূর্যকুমার যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, কুলদীপ যাদব, শারদুল ঠাকুর, জসপ্রিত বুমরাহ, মোহাম্মদ সামি ও মোহাম্মদ সিরাজ।