ফের ভারতীয় ভূখণ্ডকে নিজেদের অংশ বলে দাবি করল চিন! গতকাল, সোমবারই ‘স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ’-এর ২০২৩ সালের নয়া সংস্করণ প্রকাশ করেছে চিন। তাতেই দেখা গেছে, অরুণাচল প্রদেশ ও আকসাই চিনের বিতর্কিত এলাকাগুলিকে নিজেদের ভূখণ্ড বলে দাবি করেছে চিন। একইসঙ্গে তাইওয়ান ও দক্ষিণ চিন সাগরকেও নিজেদের ম্যাপের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
চিনের এই ম্যাপ প্রকাশ্যে আসার পরই তার তীব্র বিরোধিতা করেছে ভারত। ভারত স্পষ্ট জানিয়েছে, অরুণাচল প্রদেশ সবসময়ই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, ভবিষ্যতেও তাই থাকবে।
প্রসঙ্গত, অরুণাচল প্রদেশকে দখলের চেষ্টা চিনের নতুন নয় ।
২০২১ সালে ১৫টি জায়গা দখল করে নিজেদের মানচিত্রে ঢুকিয়ে দিয়েছিল চিন। এই বছরের এপ্রিলে ফের চিন তার মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশের ১১টি স্থানের নাম বদলে দিয়েছিল। অরুণাচলের ওই ভূখণ্ড নাকি আদতে দক্ষিণ তিব্বত, এমনটাই বক্তব্য শি-এর দেশের। তবে এই দাবি বারবারই খারিজ করে এসেছে ভারত।
চিন অবশ্য কখনওই জায়গা ছাড়েনি, নানারকম ভাবে চেষ্টা চালিয়ে গেছে। কখনও অরুণাচল প্রদেশ থেকে ভারতীয় কিশোরকে অপহরণ করেছে, কখনও বিনা প্ররোচনায় লঙ্ঘন করেছে লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল। দু’পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়েছে বেশ কয়েকবার। ডোকলাম সংঘর্ষ যার জ্বলন্ত উদাহরণ। গত পাঁচ বছরে তিনবার এমন করল চিন।
তবে এসবের মধ্যেও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার জন্য ক’দিন আগে জি-২০ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মুখোমুখি হয়েছিলেন। তা ছাড়া জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে সেপ্টেম্বর মাসেও নয়াদিল্লিতে আসার কথা চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের। তার মধ্যেই ফের এই ঘটনা নয়াদিল্লির জন্য অস্বস্তির বইকি।
এ ব্যাপারে প্রশ্ন করা হলে কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, ‘গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নরেন্দ্র মোদী প্রশ্ন তুলেছিলেন, চিনকে কেন লাল চোখ দেখাতে পারছে না মনমোহন সিং। আমরা মোদীজির লাল চোখ এবার দেখতে চাই। লাদাখে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ে কয়েকশো বর্গ কিলোমিটার জমি দখল করে নিয়েছে চিন। এখন অরুণাচলকে তাদের ভূখণ্ড বলে সরকারি ভাবে দাবি করছে। এ বার অন্তত লাল চোখ দেখান প্রধানমন্ত্রী।’
এই বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে চিনের সরকারি সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমসে। তারা এক্স হ্যন্ডেলে লিখেছে, ‘চিনের মানচিত্রটির ২০২৩ সংস্করণ আনুষ্ঠানিকভাবে স্ট্যান্ডার্ড ম্যাপ পরিষেবার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছিল সোমবার। এই মানচিত্রটি চিন এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতীয় সীমানা অঙ্কন পদ্ধতির ভিত্তিতে সংকলিত হয়েছে।’