ডিসেম্বর ৫, ২০২৪

ভারতীয় সেনাকে তাড়িয়ে বেশ বিপদেই পড়েছেন মলদ্বীপের প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জু। ভারতের দেওয়া বিমান রয়েছে দেশটিতে। কিন্তু তা পরিচালনার জন্য কোনো পাইলট নেই। এগুলো পরিচালনা করত ভারতীয় সেনারা। এ কথা নিজেই জানালেন মালদ্বীপের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঘাসান মাউমুন।

এছাড়াও ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের ফলে পর্যটন সংকটেও পড়েছে দেশটি। কারণ মুইজ্জুর সেনা সরানোর সিদ্ধান্তের জবাব দিতে মালদ্বীপ বয়কটের ডাক দেয় ভারত সরকার। যার জেরে মালদ্বীপ বেড়াতে যাওয়া ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যাও অর্ধেক হয়ে গেছে। ফলে অর্থনৈতিকভাবেও ভেঙে পড়েছে দেশটি।

ইতোমধ্যেই মালদ্বীপের ঋণ সংকট নিয়ে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। তবে আর্থিক সংকটে জর্জরিত মালদ্বীপ চীনের কাছ থেকে সহায়তা নিতে প্রস্তুত বলে ধারণা করেছে আইএমএফ। সোমবার এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।

মুইজ্জু প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথগ্রহণের দিনই বলেছিলেন ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের কথা। এরপর একাধিকবার ভারতের সঙ্গে বিরোধ, সেনা প্রত্যাহারের জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়েছে মালদ্বীপ। শেষে ভারত ৭৬ জন সেনাকে প্রত্যাহার করে নেয়। আর এই সেনা প্রত্যাহারের কয়েক দিন পরই সুর নরম মালদ্বীপের।

মাউমুন জানালেন, ভারতে দেওয়া তিনটি এয়ারক্রাফট উড়ানোর জন্য পাইলট নেই মালদ্বীপ সেনাবাহিনীতে।

শনিবার মালদ্বীপ থেকে ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের বিষয় নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছেন, ‘মালদ্বীপের সেনাবাহিনীতে ভারতের দেওয়া দুটি হেলিকপ্টার ও ডর্নিয়ার এয়ারক্রাফট উড়ানোর জন্য কোনো দক্ষ পাইলট নেই। সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলেও, তার একাধিক পর্যায় থাকায়, বিভিন্ন কারণে তারা এখনো সম্পূর্ণ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়নি। সেনাবাহিনীতে তেমন কেউ নেই যাদের এই এয়ারক্রাফট ও হেলিকপ্টার উড়ানোর লাইসেন্স রয়েছে।

প্রসঙ্গত, চীনপন্থি প্রেসিডেন্ট মুইজ্জু ক্ষমতায় আসার পর থেকেই ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকে। চলতি বছরের ১০ মের মধ্যে দ্বীপরাষ্ট্র থেকে সব ভারতীয় সেনা প্রত্যাহারের সময় বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। এরপরই সময়সীমার আগেই ভারত ৭৬ জন ভারতীয় সেনাকে মালদ্বীপ থেকে প্রত্যাহার করে নেয়। যার জেরে মালদ্বীপ বর্জনে তৎপর হয়ে ওঠে ভারত সরকার।

ফলে কমে যায় ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা। এতে অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটির আর্থিক সমস্যা আরও প্রকট হয়ে পড়ে। আইএমএফ বলেছে, মালদ্বীপ বহিরাগত এবং সামগ্রিক ঋণ সংকটের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছে। পর্যটন শিল্পে ধসের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কারণ দেশটির অর্থনীতির অন্যতম উৎস সে দেশের পর্যটন খাত।

আইএমএফের অফিশিয়াল তথ্য অনুযায়ী, মালদ্বীপের বৈদেশিক ঋণ গত বছর চার হাজার ৩৮ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যা মোট দেশীয় পণ্যের প্রায় ১১৮ শতাংশ এবং ২০২২ সাল থেকে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ডলার বেশি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...