ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয় পেয়েছেন প্রবীণ বামপন্থি রাজনীতিক লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। রোববার (৩০ অক্টোবর) জাইর বলসোনারোকে হারিয়ে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদে নতুন মেয়াদে জিতেছেন তিনি।
রোববার (৩০ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্রাজিলে রোববার দ্বিতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ভোটে কট্টর ডান-পন্থি জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করে লুলার জয়কে অসাধারণ রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন হিসেবে মনে করা হচ্ছে।
চলতি অক্টোবর মাসের শুরুতে ব্রাজিলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। প্রথম দফার সেই নির্বাচনে কোনো প্রার্থীই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। আর তাই নির্বাচন গড়ায় দ্বিতীয় পর্বে। কারণ নিয়ম অনুযায়ী, দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির প্রেসিডেন্ট হতে গেলে কোনো প্রার্থীকে ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পেতে হয়।
প্রথম দফার ফলাফলে সেটি না হওয়ায় বামপন্থি লুলা এবং ডানপন্থি বলসোনারো রোববার দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আর এতেই জয় ছিনিয়ে নেন তিনি। অবশ্য প্রথম দফার নির্বাচনেও সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা দ্য সিলভা।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, রোববার দ্বিতীয় দফার নির্বাচনে ডানপন্থি জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করে ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট হতে চলেছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট লুলা দা সিলভা। আর এর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটি আবারও বামপন্থার দিকে যাত্রা করতে যাচ্ছে।
রোববারের নির্বাচনে লুলা দা সিলভা ৫০ দশমিক ৮ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর এটিই জাইর বলসোনারোকে পরাজিত করার জন্য যথেষ্ট। নির্বাচনে লুলার জয় বামপন্থি এই রাজনীতিকের জন্য অসাধারণ রাজনৈতিক প্রত্যাবর্তন বলে মনে হচ্ছে। কারণ দুর্নীতির দায়ে কারাগারে থাকায় ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি তিনি।
অবশ্য দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণের আগেই একাধিক জনমত জরিপে বলসোনারোর চেয়ে এগিয়ে ছিলেন লুলা। রোববার একাধিক জরিপের বরাত দিয়ে বার্তাসংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে জানানো হয়, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জাইর বলসোনারোর সমর্থন আগের তুলনায় আরও কমেছে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী লুলা দা সিলভা তুলনামূলক সুবিধাজনক অবস্থানে আছেন।
এছাড়া নির্বাচনে লুলা ৫২ শতাংশ ভোট পেতে পারেন বলে জানিয়েছিল ডাটাফোলহা ও কোয়ায়েস্ট নামক দু’টি জরিপ প্রতিষ্ঠান।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন জাইর বলসোনারো। তবে অ্যামাজনে নির্বিচারে গাছ কাটা থেকে শুরু করে ইচ্ছাকৃত দাবানল সৃষ্টি, জনবিরোধী বিভিন্ন নীতিসহ একাধিক অভিযোগে ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা হারান কট্টরপন্থি এই প্রেসিডেন্ট।
সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দফার ভোটে জয়ের মাধ্যমে তৃতীয়বারের মতো ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট পদে ফিরতে যাচ্ছেন লুলা। প্রথম দফায় অমিমাংসিত নির্বাচনের পর রোববার দ্বিতীয় দফায় নিজেদের নেতাকে বেছে নিলেন ব্রাজিলের নাগরিকরা।