বিগত সরকারের আমলে সর্বক্ষেত্রে লুটেরা সমাজ তৈরি হয়েছে। ফলে উৎপাদনে বৈচিত্র্যতা তৈরি হয়নি। এতে কয়েকটি খাতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ হয়েছে। এর দায় হিসাববিদদের রয়েছে। ফলাফল দেশ সংকটে পড়েছে। এ সংকট কাটিয়ে ওঠতে হলে আমাদের কর প্রদানের হার বাড়াতে হবে। আবার করের টাকায় ব্যবসাবান্ধব প্রকল্প নিতে হবে। যাতে ব্যবসা গতিশীল হয়। গতকাল সকালে ইনস্টিটিউট অফ কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ বাংলাদেশ (আইসিএমএবি) চট্টগ্রাম শাখার আয়োজনে গতকাল দিসব্যাপী চট্টগ্রামের রেডিসন ব্লু তে “বাংলাদেশের বিকশিত অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে অভিগমন” শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন এসব কথা বলেন।
“বাংলাদেশের বিকশিত অর্থনৈতিক পরিপ্রেক্ষিতে অভিগমন” শীর্ষক দিনব্যাপী সম্মেলনের গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোঃ সেলিম উদ্দিন, এনবিআরের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এর সচিব মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ, বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলী হোসেন আকবর আলী এফসিএ এবং আইসিএমএবির প্রেসিডেন্ট এবং বিল্ডকন কনসালটেন্সি লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাহতাব উদ্দিন আহমেদ এফসিএমএ বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) এর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান থিম পেপার উপস্থাপন করেন। সেমিনার ও সম্মেলন কমিটির চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ শহিদ এফসিএমএ তার উদ্বোধনী বক্তব্যে অতিথি ও অংশগ্রহণকারীদের স্বাগত জানান এবং সিবিসি চেয়ারম্যান জনাব প্রদীপ পাল এফসিএ, এফসিএমএ, উপস্থিতির জন্য সবাইকে ধন্যবাদ জানান।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন বলেন, অবৈধ আর্থিক বহিঃপ্রবাহ, অলিগার্কের উত্থান, গুটিকয়েক লোকের হাতে সম্পদের কেন্দ্রীকরণ, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক উভয় প্রতিষ্ঠানের ধ্বংস এবং ব্যাপক দুর্নীতি অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করেছে। ছাত্র-নাগরিক বিদ্রোহের মাধ্যমে গঠিত নতুন সরকার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পুনর্গঠনের প্রতিশ্রুতি দেয় এবং এই নতুন যাত্রায় আইসিএমএবি থেকে অংশগ্রহণ আশা করে।
এনবিআরের চেয়ারম্যান ও অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ (আইআরডি) এর সচিব মোঃ আবদুর রহমান খান এফসিএমএ বলেন, ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপের চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে এবং অর্থনৈতিক ভিত্তিকে শক্তিশালী করতে, জাতীয় কোষাগারকে সুনির্দিষ্ট জবাবদিহিতা, স্বচ্ছতা এবং সততার সাথে প্রসারিত করতে আমরা সিঙ্গেল ডিজিটের কর আহরণে কারজ করছি। আমরা পরোক্ষ কর আদায় থেকে প্রত্যক্ষ কর আদায় বাড়ানোর চেষ্ঠা করছি।
বিএসআরএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আলী হুসেন আকবর আলী এফসিএ “বৈচিত্র্যকরণ, ব্যবসায় স্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা এবং পরিবেশগত বিষয়গুলির বিবেচনার পাশাপাশি গ্রাহকের সন্তুষ্টি নিঃসন্দেহে আমাদের অর্থনৈতিক ল্যান্ডস্কেপকে উন্নত করবে” বলে মন্তব্য করেছেন।
বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ, জননীতি বিশেষজ্ঞ এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম. মাসরুর রিয়াজ, “টেকসই অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার: মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ ও রাজস্ব নীতি ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক গবেষণাপত্রটি উপস্থাপন করেন । সেশনটি পরিচালনা করেন মোঃ মামুনুর রশিদ এফসিএমএ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, ইনডেক্স গ্রুপ অব কোম্পানিজ এবং সাবেক প্রেসিডেন্ট, আইসিএমএবি। লিভারনগিয়ার লিমিটেডের পরিচালক ও সিইও এবং আইসিএমএবির কাউন্সিল সদস্য মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এফসিএমএ এবং আলম এম জামান অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের সিনিয়র পার্টনার জনাব ইমতিয়াজ আলম এফসিএ, এফসিএমএ আলোচনাকারী হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে সিআইইউ বিজনেস স্কুলের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের প্রধান ড. ইমন কল্যাণ চৌধুরী “বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার জন্য স্থানীয় শিল্পকে শক্তিশালী করা: কৌশলগত ব্যয় ব্যবস্থাপনার ভূমিকা” শীর্ষক আরেকটি গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন । সোনালী ব্যাংক পিএলসির চেয়ারম্যান মুসলিম চৌধুরী সেশনটি পরিচালনা করেন, এবং শান শিং গ্রুপের প্রুপ সিএফও এবং কোম্পানি সেক্রেটারি এবং আইসিএমএবির ভাইস-প্রেসিডেন্ট মোঃ কাউসার আলম এফসিএমএ মন্তব্য করেন ।
এডিসন লজিস্টিকস বিজনেসের সিইও এবং আইসিএমএবির কাউন্সিল সদস্য মোঃ মাকসুদুর রহমান এফসিএমএ এবং লংকাবাংলা ফাইন্যান্স লিমিটেডের হেড অব অপারেশন্স এ কে এম কামরুজ্জামান এফসিএমএ সেশনে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
সম্মেলনে আইসিএমএবির বিপুল সংখ্যক ফেলো ও অ্যাসোসিয়েট সদস্য, শিক্ষাবিদ, সরকারি, আধা-সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ এবং বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।