করোনার সময় থেকেই দেশের অর্থনীতিতে অস্থিরতা বিরাজ করছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ সংকট আরও বাড়িয়ে তুলেছে। অর্থনীতির নানা চাপ সামাল দিতে ব্যাংক খাত থেকে রেকর্ড পরিমাণ ঋণ নিয়েছে সরকার। সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে ব্যাংক খাত থেকে সরকার এক লাখ ২৪ হাজার ১২২ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার।
সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে এক লাখ ২৪ হাজার ১২২ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। যা বাজেটের সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আট হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা বেশি। এদিকে সরকারের বর্তমান ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে তিন লাখ ৯৮ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা।
জানা যায়, ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে ব্যাংক খাত থেকে সরকার ঋণ নেওয়ার লক্ষ্য ঠিক করেছিল এক লাখ ছয় হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা। কিন্তু সঞ্চয়পত্র থেকে ঋণ কমে যাওয়া এবং রাজস্ব আহরণ কম হওয়ায় সংশোধিত বাজেটে ব্যাংক ঋণের লক্ষ্যমাত্রা বাড়িয়ে এক লাখ ১৫ হাজার ৪২৫ কোটি টাকা নির্ধারণ করা হয়। এরপরেও বাড়তি ব্যয় মেটাতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আট হাজার ৭০০ কোটি টাকা বেশি ঋণ নিতে হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত সরকারের ব্যাংক থেকে নিট ঋণের পরিমাণ ছিল ৯২ হাজার ২৮৯ কোটি টাকা। আর ২০ জুন তা বেড়ে এক লাখ ১২ হাজার ২৪১ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। অর্থাৎ জুনের প্রথম ২০ দিন সরকারের ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণের অঙ্ক ছিল ১৯ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। তবে ২২ জুন সরকারের নিট ঋণের অঙ্ক আরও বেড়ে এক লাখ ২৭ হাজার ৪৭৪ কোটি টাকাতে পৌঁছায়। অর্থাৎ দুই দিনে সরকার ব্যাংক থেকে নিট ঋণ নিয়েছে ১৫ হাজার ২৩৩ কোটি টাকা। পুরো টাকাই জোগান দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে ২৬ জুন ছিল গত অর্থবছরের শেষ দিন। কারণ ২৭ তারিখ থেকে শুরু হয় পবিত্র ঈদুল আজহার সরকারি ছুটি। অর্থবছর শেষে ব্যাংক খাত থেকে সরকারের ঋণের অঙ্ক দাঁড়ায় এক লাখ ২৪ হাজার ১২৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৯৮ হাজার ৮২৬ কোটি টাকা সরবরাহ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে নিয়েছে ২৫ হাজার ২৯৬ কোটি টাকা।