নভেম্বর ১৫, ২০২৪

দেশের চলমান পরিস্থিতিতে টাকা পাচার রোধ ও নিরাপত্তার অভাবে ব্যাংকিং সেবা সীমিত করা হয়েছে। এটিএম বুথগুলোর বেশির ভাগই বন্ধ। যেগুলো খোলা সেগুলোতে টাকা নেই। নিরাপত্তার অভাবে টাকা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে অনলাইনে টাকা স্থানান্তর কার্যক্রমও সীমিত করা হয়েছে। অনেক ব্যাংকের গ্রাহকরাই অনলাইনে টাকা স্থানান্তর করতে পারছেন না। দেশ থেকে বিদেশেও লেনদেন করা যাচ্ছে না।

সাপ্তাহিক ছুটির কারণে গত শুক্রবার ব্যাংক বন্ধ ছিল। এটিএম বুথ ও অনলাইন সেবা চালু থাকার কথা থাকলেও এগুলোর সেবা ছিল খুবই সীমিত। শনিবারও গেছে একই অবস্থা। শনিবার বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে জড়িত কিছু ব্যাংকের শাখা খোলা থাকার কথা থাকলেও বেশির ভাগ শাখাই খোলেনি। যেগুলো খোলা ছিল সেগুলো থেকেও বড় অঙ্কের লেনদেন করা সম্ভব হয়নি।

গত বুধবার রাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) নির্দেশনা দেওয়া হয় যে, বৃহস্পতিবার কোনো ব্যাংক থেকে গ্রাহকদের সর্বোচ্চ এক লাখ টাকার বেশি নগদ উত্তোলন করার সুযোগ যেন না দেওয়া হয়। ফলে গ্রাহকরা ব্যাংক থেকে এক লাখ টাকার বেশি তুলতে পারেননি। তবে অনলাইন লেনদেনের ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। এছাড়া এটিএম বুথ থেকেও টাকা তোলার ক্ষেত্রে কোনো বিধিনিষেধ ছিল না। কিন্তু ব্যাংকগুলো সতর্কতা হিসাবে বড় লেনদেনের ক্ষেত্রে খুব সতর্ক ছিল। ফলে অনেক গ্রাহক এক লাখ টাকা তুলতে পারেননি।

এদিকে নিরাপত্তার অভাবে এখন টাকা স্থানান্তর করতে পারছে না ব্যাংকগুলো। ফলে শাখার পাশাপাশি এটিএম বুথগুলোতেও টাকার সংকট দেখা দিয়েছে। তবে নিরাপদ এলাকায় অবস্থিত ব্যাংকের শাখা ও এটিএম বুথগুলোতে টাকার জোগান দেওয়া হচ্ছে।

অনলাইন সেবা সার্বক্ষণিক চালু থাকলেও নানা জটিলতায় অনেক গ্রাহকই টাকা স্থানান্তর করতে পারেননি। বিশেষ করে বিদেশে টাকা স্থানান্তর করা একেবারেই সম্ভব হয়নি। ব্যাংকগুলো তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে এ খাতের বাধার সৃষ্টি করে রেখেছে।

ব্যাংকাররা জানান, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যাংক লেনদেন স্বাভাবিক হবে। এর আগে সব শাখা খোলা হবে না। কারণ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা রয়েছে, নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করে শাখা খোলার জন্য।

এর কারণ হিসাবে জানা গেছে, গত সোমবার আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হওয়ার পর এই দলের নেতাকর্মীসহ দলের অনুগত লোকরা পালাতে শুরু করে। তারা ব্যাংক থেকে বেশি মাত্রায় নগদ টাকা তুলে সেগুলোসহ পালিয়ে যায়। এসব টাকা বিভিন্ন খাতে ঘুম হিসাবে দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। এছাড়া অনলাইনেও বিদেশে টাকা স্থানান্তর করতে থাকে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা থেকে এসব তথ্য পায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে বাংলাদেশ আর্থিক গোয়েন্দা ইউনিট থেকে গত বৃহস্পতিবার বৈঠক করে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...