সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

সরকারি নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা ব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালে দেওয়া পরিপত্র বহাল রাখার দাবিতে দেশের বেশিরভাগ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

কোটা আন্দোলনকারী নেতাদের দেওয়া কর্মসূচি বাস্তবায়নে ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন সারা দেশের শিক্ষার্থীরা। যার যার বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপ ও পেজ থেকে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরতে নারাজ। নিজ নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভাগীয় গ্রুপ ও ফেসবুক পোস্টে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করতে দেখা গেছে।

চলমান ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করে তারা ক্লাস পরীক্ষা বর্জনের ডাক দিয়েছেন।

সার্বিক বিষয়ে কোটা আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা অনলাইন এবং অফলাইনে জনসংযোগ চালিয়েছি। ঢাবি থেকে আমরা অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। এ পর্যন্ত ৪৭টি বিভাগের সকল ব্যাচ আমাদের আন্দোলনে পূর্ণ সংহতি জানিয়েছে। এ ছাড়া আরও ১৬টি বিভাগ আংশিকভাবে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। এখনও অনেক বিভাগ ও ব্যাচ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও আমরা অনেক সাড়া পাচ্ছি। এমনকি আনন্দমোহন কলেজ থেকেও ক্লাস বর্জনের কথা আমরা জানতে পেরেছি। আমরা মনে করি এটা আমাদের বড় অর্জন। আমাদের ৪ দফা দাবি না মানলে আমরা রাজপথ ছাড়ব না। আমরা বিজয় নিয়েই ঘরে ফিরব।

জাবি, জবি, রাবি, চবি, ইবিসহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ থেকেও ক্লাস বর্জনের ঘোষণা এসেছে। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে আগামী ৭ দিনের ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৬৬টি ব্যাচের শিক্ষার্থীরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা করেছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫টি বিভাগে ক্লাস বন্ধ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৮টি ব্যাচ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে গেলেও এখনও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি।

প্রসঙ্গত, সরকারি চাকরির প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণিতে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় আপাতত বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ হলে রাষ্ট্রপক্ষকে লিভ টু আপিল (নিয়মিত আপিল) করতে বলেছেন আদালত।

গেল বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে ছয় বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

শুনানিতে আপিল বিভাগ রাষ্ট্রপক্ষের উদ্দেশে বলেন, আপাতত হাইকোর্টের রায় যেভাবে আছে, সেভাবে থাকুক। রায় প্রকাশ হলে আপনারা নিয়মিত আপিল দায়ের করুন। আমরা শুনব।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *