সুপার ওভারের প্রথম দুই বলেই অভিজ্ঞ ডেভিড উইসার ব্যাট থেকে এলো ১০ রান। প্রথম বলে চার আর দ্বিতীয় বলে ছয়। ওমান এবং নামিবিয়া ম্যাচের সবচেয়ে বড় তারকা তিনি। ম্যাচের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বুঝিয়ে দিলেন নিজের মর্মটা। সুপার ওভার নাটকে গড়ানো নামিবিয়া-ওমান ম্যাচের সব আলো উইসা কেড়ে নিলেন শুরুর ওই দুই বলেই।
শেষ পর্যন্ত উত্তাপ ছড়ানো এই ম্যাচের ভাগ্যটাও নির্ধারণ হলো এখানেই। অধিনায়ক গেরহার্ড এরাসমাস শেষ দুই বল সুযোগ পেয়ে তুললেন আরও ৮ রান। সুপার ওভারে নামিবিয়ার সংগ্রহ ২১ রান।
বোলিংয়ে আজ নামিবিয়ার হয়ে দুর্দান্ত ছিলেন ট্রাম্পেলম্যান। তবে অধিনায়ক ভরসা রাখলেন উইসার অভিজ্ঞতার ওপর। তিনিও নিরাশ করেননি। ২২ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নামা ওমানকে আটকে রাখলেন ৬ রানেই। প্রথম বলে দুই। আর পরের বলে ডট। সেখানেই ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে যায় নামিবিয়ার জন্য। তৃতীয় বলে নাসিম খুশিকে আউট করে জয় নিশ্চিত করে ফেলেন উইসা।
শেষ তিন বলে ওমানের সংগ্রহ ৮ রান। ওমান সুপার ওভারে থামে ১০ রানে। নামিবিয়ার জয় ১১ রানের ব্যবধানে। নির্ধারিত ২০ ওভারে ওমানের হাতের মুঠোয় থাকা ম্যাচটায় জয়ের হাসি হেসেছে নামিবিয়া। ডেভিড উইসার অভিজ্ঞতাই শেষ পর্যন্ত নির্ধারণ করল লো-স্কোরিং ম্যাচের ভাগ্য।
বার্বাডোজে অনুষ্ঠিত এই ম্যাচে বোলারদের দাপট থাকবে সেটা বোঝা গিয়েছিল ওমান ইনিংসের শুরুতেই। ট্রাম্পেলম্যান প্রথম দুই বলেই পেলেন দুই উইকেট। শুরুর সেই ধাক্কাটা এশিয়ান দেশটি আর সামলে নিতেই পারেনি। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়েছে। জিসান মাকসুদ এবং খলিল খানের দুই ইনিংস ওমানকে খানিক ভরসা দিয়েছে। পুরো দলে দুই অঙ্কের ঘরে নিজেদের রান নিতে পেরেছেন কেবল ৪ জন।
ইনিংসের প্রথম দুই বলে দুই উইকেট হারানো ওমানকে এরপর ভরসা দেখিয়েছেন জিশান মাকসুদ এবং খালিদ খান। জিশান ইনিংস মেরামত করেছিলেন। সঙ্গী হিসেবে ছিলেন খালিদ। যদিও ব্যক্তিগত ২২ রান ফিরে যান জিশান। এরপর খালিদ সঙ্গী হিসেবে পান আয়ান খানকে। সেই জুটিও বড় হয়নি। দলীয় ৬৮ রানে ফেরেন আয়ান। দলের ৫ম উইকেটের পতন।
এরপরেই আরেকদফা ধস নামে তাদের ইনিংসে। ৬৮ থেকে ৯৯ রানে যেতেই ওমান হারায় ৫ উইকেট। একপর্যায়ে ওমানের সংগ্রহ ১০০ পার হওয়া নিয়েই ছিল শঙ্কা। কিন্তু শেষ দিকে শাকিল আহমেদের দুই চার তাদের দলীয় সংগ্রহ টেনে নেয় ১০৯ রান পর্যন্ত। ক্ষুদ্র এই রানটাই অবশ্য একসময় মনে হচ্ছিল যথেষ্ট।
সেটার জন্য অবশ্য কৃতিত্ব পাবে ওমানের বোলাররা। বিলাল খান প্রথম ওভারেই পেয়েছেন উইকেটের দেখা। নিকোলাস ডাভিন আর ইয়ান ফ্রাইলিংক অবশ্য ইঙ্গিত দিয়েছিলেন একপেশে ম্যাচের। ধীরগতির ব্যাটিং করলেও রানরেট রেখেছিলেন নাগালের মাঝে। ৪২ রানের জুটি গড়ে ফেরেন ডাভিন। এরপর অধিনায়ক ইরাসমাসকে নিয়ে দলকে জয়ের দিকে নিতে থাকেন ফ্রাইলিঙ্ক।
বিপর্যয়ের শুরু এরাসমাসের উইকেট দিয়ে। পুরো ম্যাচে ৩ ক্যাচ ছেড়ে ওমান যখন হতাশ, তখনই উইকেটের দেখা পান আয়ান খান। জিশান মাকসুদের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নামিবিয়া অধিনায়ক। এরাসামাস-ফ্রাইলিং জুটি ছিল ধীরগতির। সেটা পরে আরও ধীর হয়ে আসে। একের পর এক ডটবল চাপ বাড়াতে থাকে নামিবিয়া ইনিংসে।
শেষ ওভারের আগের ওভারে বিলাল খানের বলে ছয়টা আরও হতাশ করেছিল ওমানকে। মেহরান খান তবু শেষ ওভারে শুরুটা করেছিলেন দারুণ। প্রথম তিন বলের মাঝেই তুলে নিয়েছেন দুই উইকেট। শেষ বলে দরকার ছিল ২ রান। ব্যাটার ডেভিড উইসা নামিবিয়ান ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অভিজ্ঞও তিনি। শেষ বলে ব্যাটে বলে করা হয়নি। ১ রান নিয়েই থামলেন। ম্যাচ যায় সুপার ওভারে।
আর সেখানেই নিজের অভিজ্ঞতার চমক দেখান উইসা। ব্যাট হাতে ১৩ রান। আর বল হাতে ১ উইকেটের বিনিময়ে ১০ রান দিয়ে নামিবিয়াকে এনে দিলেন মনে রাখার মতো এক জয়।