সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

দেশের বিচার বিভাগ ও বিচারালয়কে যেন কোনোভাবে রাজনীতিকরণ না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। আজ রোববার (৮ অক্টোবর) আপিল বিভাগের আদালত কক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয়ের পক্ষ থেকে সংবর্ধনা দেওয়ার সময় এ কথা বলেন প্রধান বিচারপতি।

সুপ্রিম কোর্টের আপিল ও হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি, প্রধান বিচারপতির পরিবারের সদস্য ও আইনজীবীদের উপস্থিততে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আমি চাইব বিচার বিভাগ ও বিচারালয়কে যেন কোনভাবে রাজনীতিকরণ করা না হয়। এখানে বিচারক ও বিজ্ঞ আইনজীবীদের সম্মিলিত ও মেধাপুষ্ট দায়িত্ব পালনের মাধ্যমেই কেবল সুবিচারের লক্ষ্য অর্জিত হতে পারে এবং তবেই বিচার বিভাগের মর্যাদা অক্ষুণ্ণ থাকবে।’

প্রধান বিচারপতি বলেন, একটি কথা একটু অপ্রিয় হলেও বলতে চাই, কোনো বিষয়ে ভালোভাবে না জেনে বা যথেচ্ছভাবে বিচারক ও আদালত সম্পর্কে কটু মন্তব্য মোটেই সভ্যতার ইঙ্গিত বহন করে না। সাবেক প্রধান বিচারপতি হাবিবুর রহমানের ভাষায় আমিও উচ্চারণ করতে চাই, কোনো বিচারকই সমালোচনার ঊর্ধ্বে নন। সভ্য জগতে ভব্য সমালোচনার একটা অবকাশ রয়েছে। বিচারকের রায়ের সমালোচনা করার অধিকার বাকস্বাধীনতার এক অংশ বলে আমি মনে করি। আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ সাপেক্ষে সংবিধানে এই বাকস্বাধীনতার নিশ্চয়তা বিধান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, দেশে যে মুক্ত সাংবাদিকতা বিরাজ করছে তার ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ণ রাখার জন্যে যথেচ্ছা সমালোচনার পরিবর্তে জেনে শুনে ওয়েল ইনফরমড হয়ে সমালোচনার প্রয়োজন। তবে কেউ যদি স্বাধীনতার অপব্যবহার করে- তা সংবাদমাধ্যমই হোক, আইনজীবীই হোক বা যে কেউ হোক তাকে শায়েস্তা করার জন্য আদালতের হাত যথেষ্টই লম্বা।

মামলাজট ও বিলম্বিত বিচার প্রক্রিয়া প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘মামলা জট ও বিলম্বিত বিচার প্রকারান্তরে সুবিচারের ধারণাকে বিনষ্ট করে। কীভাবে এটি থেকে বিচার বিভাগকে মুক্ত করা যায়, সেই কার্যকর পথ ও প্রক্রিয়া বের করতে হবে।’

দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘সংবিধানের প্রতি লক্ষ্য রেখে বিচার প্রশাসনকে রাখতে হবে স্বচ্ছ, দুর্নীতিমুক্ত, স্বাধীন এবং সোশ্যাল জাস্টিস তত্ত্বের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা দেশ ও জাতির জন্য গর্বের। আমার দায়িত্ব পালনকালে সতীর্থ বিজ্ঞ বিচারক এবং আইনজীবীদের সুচিন্তিত পথ ধরে একটি দুর্নীতিমুক্ত বিচার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব।’

প্রসঙ্গত, গত ১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের ২৪তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে ওবায়দুল হাসানকে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। এদিকে ২৩তম বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর মেয়াদ শেষ হয় ২৫ সেপ্টেম্বর।

এদিকে সুপ্রিম কোর্টের অবকাশকালীন ছুটি শেষে আজ (রোববার) থেকে সুপ্রিম কোর্টে নিয়মিত বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *