কোলাহলপূর্ণ জ্যামের শহর ছেড়ে কোলাহলহীন শহরে হচ্ছে এখন বাণিজ্য মেলা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে তৃতীয়বারের মতো বসেছে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা ২০২৪। মেলার স্টলগুলো হল এ এবং হল বি—এই দুই ভাগে বিভক্ত। স্টল আছে মূল ভবনের বাইরেও।
তথ্যকেন্দ্রের তথ্যমতে, মেলায় দেশি-বিদেশি ৩৫০টি প্রতিষ্ঠানের স্টল স্থান পাবে, এর মধ্যে দৃশ্যমান আছে ৩০৮টি দেশি ও ১১টি বিদেশি প্রতিষ্ঠানের স্টল। অন্য স্টলগুলোর নির্মাণকাজ এখনো চলছে।
মেলায় প্রতিবারের মতো এবারও ভারতীয় স্টলগুলোয় প্রাধান্য পাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের কাশ্মীরি শাল, মাফলার, টেবিল ক্লথ ও রানার, ব্যাগ, জুতা, ওয়ানপিস, টুপিস, থ্রিপিস ছাড়াও আর অনেক কিছু। তুর্কিস্তানের দোকান একটু আলাদাভাবেই নজর কাড়ে দৃষ্টিনন্দন সব আলোকবাতির জন্য। হাতে ফুটিয়ে তোলা নকশায় সিরামিকের বাটি, বিভিন্ন শোপিস, ফুলদানি, দেয়ালঘড়ি ইত্যাদি রয়েছে। ইরানি স্টলে নজর কাড়ছে অ্যাক্রিলিক ফাইবারের তৈরি রঙিন তৈজসপত্র। যা সহজে ভাঙবে না, ফাটবে না, রং উঠবে না, ব্যবহার করা যাবে মাইক্রো ওভেনেও। প্লেট, হাফ প্লেট, কোয়ার্টার প্লেট, স্যুপ, তরকারির বাটি, ফ্রুট বোল, ট্রে, মসলা রাখার বাক্স থেকে শুরু করে খাতায় দাগ টানার স্কেলও।
বাণিজ্য মেলার ছেলেদের পোশাকে অন্যতম আকর্ষণ থাকে ব্লেজারে। নানা রং–বৈচিত্র্যের সঙ্গে আছে চেক ও প্রিন্টের ব্লেজার ও কোটির সংগ্রহ। বাণিজ্য মেলার ছেলেদের পোশাকে অন্যতম আকর্ষণ থাকে ব্লেজারে। নানা রং–বৈচিত্র্যের সঙ্গে আছে চেক ও প্রিন্টের ব্লেজার ও কোটির সংগ্রহ। জয়িতায় জামদানি শাড়ি থেকে শুরু করে আছে সব রকমের পোশাক। বাঁশ, বেত, সিরামিক ও পিতলে গড়া ঘর সাজানোর বিভিন্ন শোপিসও পাওয়া যাচ্ছে বাণিজ্য মেলায়।
‘বন্দীদের উৎপাদিত পণ্য কিনুন, বন্দী পুনর্বাসনে সহায়তা করুন’—এই স্লোগানে মেলায় প্রবেশ করে হাতের ডানে মূল প্রদর্শনী কেন্দ্রের বাইরে বসেছে বাংলাদেশ জেল কারা পণ্যের দোকান। কুষ্টিয়া, যশোর, পাবনা, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, লালমনিরহাট, কুমিল্লার মতো দেশের বিভিন্ন জেলখানার বন্দীদের নিজ হাতে বানানো পণ্য বিক্রি হচ্ছে এখানে। আছে বাঁশ বেতের মোড়া, কুলা, চালুনি, চেয়ার, ফলের ঝুড়ি, ঢাকনা, ঝাড়ু, ঘুড়ির নাটাই, পাটের ব্যাগ, পাটের দোলনা, শোপিস। কাঁঠাল ও শাল কাঠ থেকে বানানো কাঠের চামচ, ডাল ঘুঁটনি, কাঠের হ্যাঙ্গার, টুল, ভর দিয়ে চলার লাঠি, বসার পিঁড়ি, পিঠা বানানোর বেলন। আছে শার্ট, টি–শার্ট, কোট, ব্লেজার, ট্রাউজার, লুঙ্গি, গামছা, কুশন কাভার, নকশিকাঁথাসহ আরও অনেক কিছুই।
এছাড়া ইলেকট্রনিক্স পণ্যের মধ্যে ভিস্তা মিয়াকো ওয়ালটন ছাড়া আরো অনেক ব্র্যান্ডের পণ্য রয়েছে। ফার্নিচারের মধ্যে আখতার, হাতিল, নাদিয়া, রিগ্যাল, ছাড়া আরো অন্যান্য ব্র্যান্ডের পণ্য রয়েছে
২১ জানুয়ারি শুরু হওয়া মাসব্যাপী এই মেলা চলবে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে খোলা থাকবে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় প্রবেশমূল্য জনপ্রতি ৫০ টাকা। বয়স যাদের ১২ বছরের নিচে, তাদের জন্য ২৫ টাকা। মেলায় যাতায়াতের সুবিধার জন্য আছে বিআরটিসির দোতলা বাসের বিরতিহীন বিশেষ সার্ভিস।