ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য বলে জানিয়েছেন দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দ্য ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলম।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় রাজধানীর মতিঝিলে জাতীয় বাজেট ২০২৪-২৫ নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি এ কথা বলেন।

মাহবুবুল আলম বলেন, ‘প্রতি বছর যখন বাজেট হয়, গত পাঁচ দফায় আমরা দেখেছি, ১০ থেকে ১২ শতাংশ বাজেট বেড়েছে। এবার চার দশমিক শতাংশ প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি, এটা যৌক্তিক, বাস্তবসম্মত ও বাস্তবায়নযোগ্য। যদি আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করি, আমি আশা করি, এটা বাস্তবায়নযোগ্য।’

তিনি বলেন, ‘মূল্যস্ফীতি ইজ ভেরি ভেরি সেনসিটিভ। এটা এসেনশিয়াল কমোডিটিতে ১০ দশমিক পাঁচ এবং অন্যান্য জায়গায় ১০ দশমিক ছয়। এটাকে ছয় দশমিক পাঁচে আনার জন্য এবারের বাজেটে প্রস্তাবনা দিয়েছে।

‘আমি মনে করি, অ্যাম্বিসাস কোনো প্রজেক্ট না নিলে এবং যে প্রজেক্টগুলো নেওয়া হচ্ছে সেগুলো যদি বাস্তবায়ন করা যায়, সবাই মিলে যদি কাজটা ঠিকভাবে করা যায় তাহলে মূল্যস্ফীতি কমে আসবে,’ যোগ করেন তিনি।

এই ব্যবসায়ী নেতা আরও বলেন, ‘ব্যক্তি করসীমা সাড়ে তিন লাখ টাকা ছিল, সেটা অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। আমাদের প্রস্তাব ছিল চার লাখ ৫০ হাজার টাকা করার। আমরা অনুরোধ করব, এটা যেন চার লাখ ৫০ হাজার টাকা করা হয়।’

চ্যালেঞ্জিং সময়ে গতানতুগতিক বাজেট কোনো সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না বলে মন্তব্য করেছেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) সন্ধ্যায় তাৎক্ষণিক বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল এই বাজেট অনেক উদ্ভাবনী হবে। এখানে সৃজনশীল ও কিছু সাহসী পদক্ষেপ থাকবে। কারণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জিং সময়ে গতানুগতিক বাজেট কোনো ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে পারবে না। নতুন বাজেটটা আমাদের কাছে অতীতের বাজেটের মতোই মনে হয়েছে। বর্তমান সময়ের সমস্যা, ক্রান্তিকালীন সংকট দেখা দিয়েছে অর্থনীতিতে। সেগুলো সমাধানে এই বাজেট যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিতে পারেনি। দিকনির্দেশনা দিতে পারেনি।

১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগকে নৈতিকভাবে সমর্থন করা যায় না জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় না। এ ধরনের পদক্ষেপ বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য করা হয়। কিন্তু এর ফলাফল আমরা দেখি না। একেবারে কালো টাকা সাদা করার জোয়ার এসেছে বা প্রচুর টাকা এসেছে, এমন কিছু দেখা যায় না।

বাজেটে বিভিন্ন সূচকে যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে সেগুলো বাস্তবসম্মত কি না? এমন প্রশ্ন তুলে ফাহমিদা বলেন, জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা, বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা এ রকম সবগুলো ক্ষেত্রে যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে, এগুলোর সঙ্গে বাস্তবতার ছোঁয়া নেই। মনে হচ্ছে অনেকটাই আইএমএফ যে লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে দিয়েছে, সেটার কাছাকাছি নেওয়ার একটা চেষ্টা। এখানে যৌক্তিক কোনো চিন্তাভাবনা করা হয়েছে কি না সেটা নিয়ে সন্দেহ আছে।

বাজেটে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বেশ কিছু পণ্যের উপর সরকার কিছু করছাড়ের প্রস্তাব দিয়েছে। এটা ভালো প্রস্তাব। তবে দেখার বিষয় হলো এটা কীভাবে বাস্তবায়ন হয়। কারণ দেখা যায় কর কমালেও সেটার বাজারে প্রভাব পড়ে না। এজন্য বাজার ব্যবস্থাপনা মনিটরিংটা গুরুত্বপূর্ণ। সামাজিক নিরাপত্তাখাতের বরাদ্দে সামান্য পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এরমধ্যে সঞ্চয়পত্রের সুদ, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পেনশনের অর্থ, কৃষিখাতের ভর্তুকী এখানে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে এটাকে বড় বরাদ্দ দেখা যায়। এগুলো বাদ দিলে দেখা যায় সামাজিক নিরাপত্তা খাতে বরাদ্দ বাড়েনি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...