এশিয়া কাপ নিজেদের প্রথম ম্যাচে শ্রীলংকার বিপক্ষে মাত্র ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। স্বাগতিকদের বোলিং তোপে তাসের ঘরের মতো গুটিয়ে যায় টাইগাররা।
শুরুতেই টপ অর্ডারের ৩ ব্যাটারকে হারিয়ে বিপদে পড়ে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই চাপ সামলে তরুণ ব্যাটার তাওহিদ হৃদয়কে সঙ্গে নিয়ে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের চতুর্থ ফিফটিও তুলে নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অপর প্রান্তে নিয়মিত বিরতিতে ব্যাটসম্যানরা উইকেট বিলিয়ে দেওয়ার পর তিনিও থেমেছেন ব্যক্তিগত ৮৯ রানে। সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়তে হয় তাকে। তাতে এশিয়া কাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বড় সংগ্রহের আশা পূরণ হলো না বাংলাদেশের।
আজ বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ রানে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৮৯ রান করা শান্ত খেলেছেন ১২২ বল। যা সাজানো ছিল সাতটি বাউন্ডারিতে।
উইকেটের সুবিধা কাজে লাগাতে পাল্লেকেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটিতে টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন সাকিব। কিন্তু সেই সুবিধার ছিটেফোটাও কাজে লাগাতে পারেনি লাল-সবুজরা। ওপেনিং জুটিতে হতাশ করেন নাঈম শেখ ও অভিষিক্ত তানজিদ হাসান তামিম। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই ব্যর্থ হন তামিম। মাহিশ থিকশানার মিডল স্টাম্পের ওপর করা বল মোকাবিলায় ভুল লাইনে খেলতে গিয়ে লেগ বিফোরে কাটা পড়েন তিনি। বাংলাদেশের ১৬তম ব্যাটার হিসেবে অভিষেকে শূন্যতে ফিরেন তানজিদ তামিম।
টিকতে পারেননি আরেক ওপেনার নাঈমও। বারবার সুযোগ হারানো নাঈম ২৩ বলে খেলে ১৬ রানে ফেরেন সাজঘরে। দ্রুত বিদায় নেন ওয়ানডাউনে নামা সাকিবও। ১১তম ওভারে মাথিশা পাথিরানার অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট লেংথ ডেলিভারি কাট করতে গিয়ে আউট হন সাকিব (৫)। উইকেটের পেছনে দুর্দান্ত ক্যাচ নিয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ককে সাজঘরের পথে হাঁটান কুসাল মেন্ডিস।
৩৬ বলে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ। তাওহিদকে নিয়ে সেই চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন শান্ত। কিন্তু কিছুদূর যেতে তাওহিদও ফিরে যান ড্রেসিংরুম। ছন্দে থাকা তাওহিদকে এলবির ফাঁদে ফেলেন দাসুন শানাকা। ৪১ বলে ২০ রান করেন তরুণ এই ব্যাটার।
একের পর এক ব্যর্থতার মিছিলে পরের নামটি মুশফিকুর রহিম। পাথিরানার বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে তিনিও বিদায় নেন। ২২ বলে ১৩ রান করেন মুশফিক, ১২৭ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মধ্য কেবল টিকে ছিলেন শান্ত। উইকেটে টিকে থেকে ৬৬ বলে তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। এরপরও টেলএন্ডারদের নিয়ে দলকে টানেন তিনি। ছুটতে থাকেন সেঞ্চুরির পথে। কিন্তু শতকের আক্ষেপ নিয়ে থামতে হয় তাকে। ৮৯ রানে গিয়ে শান্ত আউট হন থিকসানার বলে। তার বিদায়ের পর দুইশর নিচেই থেমে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ দিকে নেমে মেহেদী হাসান মিরাজ করেন ১৬ বলে ৫ রান। শেখ মেহেদির ব্যাট থেকে আসে ৬ রান। ২ রান করেন শরিফুল।
বল হাতে শ্রীলঙ্কার হয়ে ৩২ রান দিয়ে সর্বোচ্চ চারটি উইকেট নেন মাথিশা পাথিরানা। দুটি উইকেট নেন মাহিশ থিকসানা। সমান একটি করে নেন ডি সিলভা ও দাসুন শানাকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৪২.৪ ওভারে ১৬৪ (নাঈম ১৬, তামিম ০, শান্ত ৮৯, সাকিব ৫, হৃদয় ২০, মুশফিক ১৩, মিরাজ ৫, মেহেদি ৬, তাসকিন ০, শরিফুল ২, মোস্তাফিজ ০ ; রাজিথা ৭-০-২৯-০, থিকসানা ৮-১-১৯-২, ধনঞ্জয়া ১০-০-৩৫-১, পাথিরানা ৭.৪-০-৩২-৪, দুনিথ ৭-০-৩০-১, দাসুন ৩-০-১৬-১)।