সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২৪

ছাত্র-জনতার তীব্র আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশ দেখেছে ক্ষমতার পালাবদল। ১৫ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকার পর সেদিন পদত্যাগ করেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ওইদিনই দেশত্যাগ করে তিনি আশ্রয় নেন ভারতে। সরকার পতনের পরপর সাধারণ মানুষের মাঝে দেখা যায় বিপুল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। তবে সারা দেশে কিছু সহিংসতার ঘটনাও ঘটে এই পালাবদলকে কেন্দ্র করে।

ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মে বলা হয় বাংলাদেশের নানা প্রান্তে সনাতন ধর্মের অনুসারী হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা চলছে। সরকার পতনের রাত থেকে পরবর্তী দুই-তিনদিন চলতে থাকে এই অভিযোগ। যদিও পরবর্তীতে ফ্যাক্টচেকে উঠে আসে এসবের প্রায় সবই ছিল গুঞ্জন। (ঢাকা পোস্টে প্রকাশিত ফ্যাক্টচেক প্রতিবেদন দেখুন এই লিংকে)

গুজব-গুঞ্জন কিছুটা কমে এলেও ভারতে থেমে নেই এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া। ভারতের একাধিক গণমাধ্যমে এখনো প্রচারিত হচ্ছে বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সহিংসতার খবর।

এবার তাতে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের জেরে সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে ভারতের মাটিতে অনুষ্ঠেয় ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচে হামলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।

সেপ্টেম্বরে ভারতের বিপক্ষে দুটি টেস্ট আর অক্টোবরে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। ৬ অক্টোবরে গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি নিয়ে শঙ্কার খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম ফ্রি প্রেস জার্নাল। সংবাদ মাধ্যমের এক্স হ্যান্ডেলে এই সম্পর্কিত ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে।

গোয়ালিয়রে অনুষ্ঠিতব্য এই ম্যাচ বাতিলের দাবি জানিয়েছে ভারতের হিন্দু জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দল অখিল ভারত হিন্দু মহাসভা। হিন্দু মহাসভার সহ-সভাপতি ডাঃ জয়বীর ভরদ্বাজ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তারা এই ম্যাচ বাতিলের সবরকমের চেষ্টা করবে।

শেষ পর্যন্ত এই ম্যাচের আয়োজন করলে তারা হামলারও হুমকি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে জয়বীর ভরদ্বাজ বলেছেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দুদের গণহত্যা করা হচ্ছে… মন্দির ধ্বংস করা হচ্ছে। এরপরেও প্রধানমন্ত্রী মোদি এখানে ম্যাচ আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাই, হিন্দু মহাসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে গোয়ালিয়রে ভারত-বাংলাদেশ ক্রিকেট ম্যাচের বিরোধিতা করা হবে। শান্তি বজায় রাখার জন্য ম্যাচটি বাতিল করা উচিত কারণ অন্যথায় দেশে অশান্তি হবে।’

টি-টোয়েন্টি ম্যাচ আয়োজন হওয়ার কথা ছিল হিমাচল প্রদেশের ধর্মশালায়। তবে বাংলাদেশের সিরিজ চলাকালীন ভেন্যু সংস্কারের কাজ চলবে সেই স্টেডিয়ামে। এ কারণেই ম্যাচটি সরিয়ে নেয়া হয়েছে গোয়ালিয়রে। এবার সেই ম্যাচকে ঘিরেই শঙ্কা তৈরি হয়েছে।

বাংলাদেশের ভারত সফর শুরু হবে ১৯ সেপ্টেম্বর চেন্নাইয়ে সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে। কানপুরে ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে দুই দল খেলবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। দুটি টেস্টই শুরু হবে বাংলাদেশ সময় সকালে ১০টায়। এরপরেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ৬ অক্টোবর গোয়ালিয়রে প্রথম টি-টোয়েন্টির পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় টি-টোয়েন্টি অনুষ্ঠিত হবে ৯ ও ১২ অক্টোবর। এই সিরিজের সবগুলো ম্যাচই হবে দিবারাত্রির।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *