বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহারকে স্পর্শকাতর দুই বিভাগ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। দায়িত্ব পুনর্বণ্টনের পর ১৩টি বিভাগের দায়িত্ব পেয়েছেন তিনি। গত ২৮ নভেম্বর এই আদেশ জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা গভর্নরের কার্যালয়ের সামনে বাংলাদেশ ব্যাংকের দুই ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহার ও ড. হাবিবুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
সর্বদলীয় ঐক্যের ব্যানারে দফায় দফায় বিক্ষোভ করেছেন কয়েক শ কর্মকর্তা-কর্মচারী। তাদের পদত্যাগের আলটিমেটামও দেন কর্মকর্তারা। তবে গভর্নর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা আন্দোলন সাময়িকভাবে স্থগিত করেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা জানান, তাদের প্রথম দাবি ছিল ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের নিয়োগকৃত দুর্নীতিতে অভিযুক্ত ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহারের একক নিয়ন্ত্রণ বন্ধ ও পদত্যাগ।
পাশাপাশি হাজার কোটি টাকা পাচারে সহায়তাকারী বাংলাদেশ ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের বিষয়ে যথাযথ তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। সেদিন এসব দাবির সঙ্গে গভর্নর একমত পোষণ করেন এবং তা বাস্তবায়নের আশ্বাস দেন। এর অংশ হিসেবে ২৮ নভেম্বর ডেপুটি গভর্নর নুরুন্নাহারের হাত থেকে সব নীতি প্রণয়নকারী বিভাগ ও মানবসম্পদ বিভাগ সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তারা স্বস্তি এবং গভর্নরের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এর আগে, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অবিস্মরণীয় অভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছাড়েন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে টানা ১৬ বছরের আওয়ামী লীগের নজিরবিহীন দুঃশাসন ও স্বেচ্ছাচারিতার অবসান ঘটে। এরপর একে একে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতিবাজ ও দলীয় কোটায় নিয়োগ-প্রমোশনপ্রাপ্তদের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হয় বিক্ষোভ। বাদ যায়নি ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংকও।
বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর।
তারা হলেন কাজী সাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম, হাবিবুর রহমান ও নুরুন্নাহার। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী হাবিবুর রহমান ও নুরুন্নাহার ডেপুটি গভর্নর হিসেবে ফের বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন। আনুষ্ঠানিকভাবে বাদ পড়েন কাজী সাইদুর রহমান, খুরশীদ আলম। আর সরকারের পতনের চার দিনের মাথায় পদত্যাগ করেন ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।