সুপার ফোরে নিজেদের প্রথম ম্যাচে হারিস-নাসিম শাহদের তাণ্ডবে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে ১৯৩ রানে। হারিস ও নাসিম দুজনে মিলেই শিকার করেছেন টাইগারদের ৭ উইকেট। এই ম্যাচে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। মূলত লাহোরের গরমে আগে ফিল্ডিং করে ক্লান্ত হয়ে ব্যাটিংয়ে নামার চ্যালেঞ্জ নিতে চায়নি বাংলাদেশ। তবে ব্যাটিংয়ে নেমে অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে সঠিক প্রমাণ করতে পারেননি ব্যাটাররা। সাকিব ও মুশফিকুর রহিম ছাড়া আর কেউই দাঁড়াতে পারেননি।
এদিন বাংলাদেশকে ভালো শুরু পেতে দেননি পাকিস্তানের বোলাররা। শাহীন শাহ আফ্রিদি নিজের প্রথম ওভারটি মেইডেন নেন। এরপর অন্যপ্রান্ত দিয়ে বোলিং আক্রমণে আসেন নাসিম শাহ। এই পেসারের করা ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলেই স্কয়ার লেগে ফখর জামানকে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো গোল্ডেন ডাক করলেন মিরাজ।
শুরুর বিপর্যয় সামাল দিয়েছেন লিটন দাস ও নাইম শেখ। অবশ্য এই দুজনের জুটি বেশিদূর এগোতে দেননি আফ্রিদি। তার করা শর্ট লেন্থের বাড়তি বাউন্স পাওয়া বল থার্ড ম্যান অঞ্চল দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন লিটন। তার ব্যাট থেকে এসেছে ১৬ রান। এরপর বেশিক্ষণ থিতু হতে পারেননি নাইম শেখ। ভালো শুরু পেলেও তিনি ইনিংস বড় করতে পারেননি। হারিসে ওপর চড়াও হতে গিয়ে বাংলাদেশের এই ওপেনার টপ এজ হয়েছেন ব্যক্তিগত ২০ রানে। ফলে ৪৫ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের তিন ব্যাটারকে হারিয়ে বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচেও ব্যর্থ হয়েছেন আগের ম্যাচে শূন্য রানে আউট হওয়া তাওহীদ হৃদয়। এই টাইগার ব্যাটার হারিসের লেংথ বলে ফ্লিক করতে গিয়ে বোল্ড হয়েছেন ব্যক্তিগত ২ রানে। এরপর বাংলাদেশের হাল ধরেন দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিম। দুজনই স্ট্রাইক রোটেড করে খেলার সঙ্গে বাউন্ডারি মেরে রানের চাকা সচল রেখেছেন। দুজনের জুটি এরই মধ্যে পঞ্চাশ ছাড়িয়েছে। মুশফিককে নিয়ে ৫৩ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নিয়েছেন সাকিব। হাফ সেঞ্চুরির পর অবশ্য বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি সাকিব।
ফাহিম আশরাফের বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ফখরকে ক্যাচ দিয়েছেন তিনি। আর তাতে শেষ হয়েছে মুশফিকের সঙ্গে তার ১২০ বলে ১০০ রানের জুটি। সাকিব ফিরে গেলে শামীম পাটোয়ারিকে নিয়ে ৭১ বলে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। এদিকে দারুণ শুরু করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি শামীম। ইফতিখারের লেংথ ডেলিভারিতে মিড অনের উপর দিয়ে মারতে গিয়ে ইমাম উল হককে উইকেট দিয়েছেন ১৬ রান করা এই ব্যাটার।
শামীমের বিদায়ের পর আউট হয়েছেন মুশফিকও। হাফ সেঞ্চুরি পাওয়া এই ব্যাটারকে ফিরিয়েছেন হারিস রউফ। ডানহাতি এই পেসারের বলে জায়গা বানিয়ে মারতে গিয়ে মোহাম্মদ রিজওয়ানের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন ৬৪ রানের ইনিংস খেলা মুশফিক। পরের বলে আউট হয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
আফিফ হোসেনের সামনে সুযোগ ছিল লোয়ার অর্ডার ব্যাটারদের নিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ দুইশোর উপরে নিয়ে যাওয়া। অথচ তিনি উইকেট ছুড়ে এসেছেন আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে। নাসিম শাহর করা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে মিড অনে ফাহিম আশরাফের সহজ ক্যাচ হয়েছেন তিনি। এরপর শরিফুলকে বোল্ড করে বাংলাদেশের ইনিংসে ১৯৩ রানে গুটিয়ে দিয়েছেন নাসিম।