বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় ভারত পাশে থাকবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশ আজ অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে রয়েছে। এই যাত্রায় বাংলাদেশের জনগণের পাশে আছে ভারত। একটি শান্তিপূর্ণ, উন্নত ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ভবিষ্যতের জন্য বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথে ভারতের সমর্থন থাকবে। বঙ্গবন্ধুর স্থিতিশীল ও সমৃিদ্ধর বাংলাদেশ বাস্তবায়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
শনিবার সকালে রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে শোক দিবসের আলোচনা সভায় ভারতীয় হাইকমিশনার এসব কথা বলেন। প্রণয় ভার্মা বলেন, ঐতিহাসিক, ভৌগোলিক, সাংস্কৃতিক এবং পারস্পরিক সহযোগিতায় বাংলাদেশ-ভারত শক্তিশালী বন্ধনে আবদ্ধ। ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের যৌথ সংগ্রাম এবং জনগণের আত্মত্যাগ উভয় দেশের মধ্যে অটুট সম্প্রীতি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধার বন্ধন সৃষ্টি করেছে, যা অব্যাহত থাকবে।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি ও তার আত্মত্যাগের সম্মানে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত একত্রে কাজ করতে এবং ১৯৭১ এর উত্তরাধিকার ও চেতনা রক্ষায় আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এটাই হবে বঙ্গবন্ধু ও তার উত্তরাধিকারের প্রতি সর্বকালের সেরা শ্রদ্ধাঞ্জলি। আমরা আশা করি অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যেতে বঙ্গবন্ধুর জীবনকর্ম আমাদের পথ দেখাবে। আমরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি এবং ১৫ আগস্টের শোকাবহ রাতকে স্মরণ করি। যোগাযোগ, নিরাপত্তা এবং সম্পর্কের ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এ ছাড়া চরমপন্থা, অসহিষ্ণুতা এবং সহিংসতার বিরুদ্ধে দুই দেশ একত্রে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন ভারতীয় হাইকমিশনার।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুক্তিযুদ্ধমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশ ভারতের এই বন্ধুত্ব নিছক নয়, এটি রক্তে লেখা বন্ধুত্ব। মহান মুক্তিযুদ্ধে মিত্র বাহিনীর সদস্য হিসেবে প্রায় ২ হাজার ৭০০ ভারতীয় সৈন্যের রক্ত এ বাংলার মাটিতে মিশে আছে। এই বন্ধুত্ব কেউ ইচ্ছে করলে মুছে ফেলতে পারবে না। অপশক্তির চেষ্টা চলছে, তবে তাদের চেষ্টা ব্যর্থ হবে। মন্ত্রী বলেন, সরকারের সুস্পষ্ট বক্তব্য সংবিধানের বাইরে নির্বাচন নয়। এ দেশের ৩০ লাখ শহিদের রক্তে লেখা সংবিধান শুধু নির্বাচন নয়, মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে পথ দেখায়। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িকতা উসকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু আমেরিকা থেকে নগদ টাকায় চাল-গম কিনেছিলেন। কিন্তু সেটা চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়নি। বরং কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছিল। অর্থাৎ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নীল নকশা সুকৌশলে তারা তৈরি করেছিল। আজ পাকিস্তান ব্যর্থ ও অকার্যকর রাষ্ট্র, আর বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত হয়েছে। এটাই তারা মেনে নিতে পারছে না। এ জন্য ষড়যন্ত্র হচ্ছে।
সভায় আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফফর হোসেন পল্টু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজীর আহমেদ, সংসদ সদস্য আরমা দত্ত ও বাসন্তী চাকমা, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সাংবাদিক আবেদ খান। বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী সমিতির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মো. রশিদুল আলমের সভাপতিত্বে সভায় সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নারায়ণ সাহা মনি স্বাগত বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন সংগঠনের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মুক্তিযোদ্ধা মো. আবদুল হক।