ডিসেম্বর ২৭, ২০২৪

বাংলাদেশে পরিবেশ ব্যবস্থাপনা জোরদার করার পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে বেসরকারি খাতকে উৎসাহিত করতে সহায়তার জন্য ঋণ হিসেবে ২৫০ মিলিয়ন ডলারের অর্থায়ন অনুমোদন দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। প্রতি ডলার ১০২ টাকা ধরে বাংলাদেশি মুদ্রায় এই ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা।

বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফরমেশন (বেস্ট) প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরকে তার প্রযুক্তিগত ও প্রশাসনিক ক্ষমতা জোরদার করতে সহায়তা করবে।
দূষণ রোধ ও পরিবেশগত মান উন্নত করতে পরিবেশগত বিধি-বিধান প্রয়োগ জোরদার করার ক্ষেত্রে প্রকল্পটি সহায়তা করবে। প্রকল্পটি বিভিন্ন খাতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন অর্থায়ন ব্যবস্থায় সহায়তা করবে।
এটি বায়ু দূষণ কমাতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগকে সমর্থন করার জন্য আর্থিক খাতকে উৎসাহিত করার জন্য একটি গ্রিন ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমও প্রতিষ্ঠা করবে।
প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন দেশে প্রধান দূষণ সমস্যা মোকাবেলায় সাহায্য করবে এবং এতে বৃহত্তর ঢাকা ও এর বাইরে বসবাসকারী ২ কোটি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ উপকৃত হবে।
বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ ও ভুটানের ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর ডান্দান চেন বলেন, দূষণের কারণে বাংলাদেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নগরায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশগত খাতে উচ্চ মূল্য দিতে হচ্ছে। দূষণ কেবল আমাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে না বরং এটি দেশের অর্থনৈতিক সামর্থও হ্রাস করছে।
তিনি বলেন, পরিবেশগত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সহযোগী।
প্রকল্পটি বার্ষিক প্রায় ৪৬ হাজার যানবাহন পরিদর্শনের জন্য একটি প্রাইভেট-পাবলিক পার্টনারশিপ পদ্ধতি ব্যবহার করে চারটি যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণে সহায়তা করবে। বার্ষিক ৩,৫০০ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য প্রক্রিয়া করার জন্য একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সুবিধা স্থাপন করা হবে। প্রকল্পটি উৎস থেকে ১ মিলিয়ন মেট্রিক টন গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমাতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র পরিবেশ বিশেষজ্ঞ এবং এই প্রকল্পের জন্য টাস্ক টিমের নেতা জিয়াং রু বলেন, সংবাদপত্রে আমরা নিয়মিতভাবে ঢাকার উচ্চ মাত্রার বায়ু দূষণের খবর দেখতে পাই। বিশ্বব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৯ সালে বাংলাদেশে এক-পঞ্চমাংশেরও বেশি মৃত্যুর জন্য বায়ু দূষণ এবং সীসার এক্সপোজার দায়ী যার দেশের জিডিপির প্রায় ১২ শতাংশ ব্যয় হয়।
তিনি বলেন, দৃঢ় পরিবেশগত বিধিবিধান এবং কঠোর পরিবেশগত বিধি প্রয়োগ বেসরকারি খাতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ বৃদ্ধি করতে উৎসাহিত করবে এবং এইভাবে দেশকে ২০৫০ সালের মধ্যে শূন্য নির্গমনের লক্ষ্য অর্জনে সহায়তা করবে।
এই প্রকল্পটি ঢাকার নদীর পানির গুণগত মান এবং একই সময়ে আন্তর্জাতিক নদীগুলোর পানির গুণগত মান পর্যবেক্ষণ শুরু করার জন্য ভূপৃষ্ঠের পানির গুণমান পর্যবেক্ষণ করার ২২ টি কেন্দ্রের প্রথম নেটওয়ার্ক স্থাপন করবে।
এটি শিল্প বর্জ্য শোধনাগারগুলোর পরিবেশগত বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার জন্য পানির গুণমান পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রও স্থাপন করবে।
বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) থেকে এ ঋণ দেয়া হচ্ছে যা পাঁচ বছরের রেয়াতি সুবিধা সহ ৩০ বছরের মেয়াদে পরিশোধ করতে হবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...