চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে নির্মিত দেশের প্রথম টানেল ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’ আগামী ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এর উদ্বোধন করবেন। উদ্বোধনের পরের দিন ভোর থেকে এটি যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
আজ বৃহস্পতিবার (২৬ অক্টোবর) সকালে রাজধানীর বনানীতে সেতু ভবনে এক ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
ব্রিফিংয়ে সেতুমন্ত্রী জানান, ২৮ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টানেল উদ্বোধন করার পর আনোয়ারা প্রান্তে ইপিজেড এর মাঠে সুধী সমাবেশে বক্তব্য দেবেন।
এসময় সেতুমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম শহরের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন ও আধুনিকায়ন করাই এ টানেলটি নির্মাণের অন্যতম কারণ। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলকে আগলে রেখেছে যে কর্ণফুলী তার বুকচির তৈরি করা হয়েছে ৩ দশমিক ৩১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের দেশের প্রথম এ সুড়ঙ্গপথ। যার মধ্যে দিয়ে খুলবে বাণিজ্যের বহুমুখী নবদুয়ার। দেশের এ প্রবেশদ্বারে ব্যবসা বাণিজ্যের ভিত্তি আরও মজবুত করতে আলাদা শক্তি জোগাবে নবনির্মিত এ টানেল।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য ৯.৩৯ কিলোমিটার। মূল টানেলের দৈর্ঘ্য ৩.৩১৫ কিলোমিটার, ব্রিজ-ভায়াডাক্টের দৈর্ঘ্য ৭২৭ মিটার (আনোয়ারা প্রান্তে), অ্যাপ্রোচ সড়কের দৈর্ঘ্য ৫.৩৫ কিলোমিটার, টোল প্লাজার ৭৬০০ বর্গমিটার, আন্ডার পাসের সংখ্যা ৫৬টি (আনোয়ারা প্রান্তে ৫টি এবং পতেঙ্গা প্রান্তে ১টি), কালভার্টের সংখ্যা ১২টি, সার্ভিস এরিয়ার ৩০টি, বাংলো একটি, ভিআইপি বাংলোসহ মোটেল মেস, কনভেনশন, সেন্টার, জাদুঘর, সুইমিংপুল, ব্রিজ, মসজিদ, অভ্যন্তরীণ রাস্তা ইত্যাদি রয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ১৪ অক্টোবর ২০১৬ সালে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে সাথে নিয়ে প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১০ হাজার ৬৮৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে বাংলাদেশে সরকারের অর্থ সহায়তা দেয় ৪ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা ও চায়না এক্সিম ব্যাংক থেকে সহায়তা নেওয়া হয় ৬ হাজার ৭০ কোটি টাকা।
সেতু কর্তৃপক্ষ বলছে, টানেল নির্মাণকে ঘিরে চট্টগ্রাম শহরকে চীনের সাংহাই শহরের আদলে ‘ওয়ান সিটি টু টাউন’ বা ‘এক নগর দুই শহর’ এর মডেলে গড়ে তোলা হবে।