নভেম্বর ১৪, ২০২৪

টানা ভারী বর্ষণে ফের ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়ছে নোয়াখালী জেলা। গত কয়েকদিনে পানি কমলেও এক রাতের বৃষ্টিতে আবার বাড়তে শুরু করেছে বন্যার পানি। এতে আতঙ্ক বাড়ছে পানিবন্দি ও বানভাসীদের। ফলে ফের আশ্রয়কেন্দ্রে ছুটছে মানুষ।

শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সকালে সরেজমিনে নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলা ঘুরে দেখা যায়, নিম্নাঞ্চলগুলো ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে প্লাবিত হয়েছে। ডুবে আছে বসতঘর ও সড়ক। বসতঘরে পানি ওঠায় অনেকেই ছুটছেন আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে।

জেলা আবহাওয়া অফিস বলছে, শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

জেলা প্রশাসকের তথ্য মতে, নোয়াখালীর ৮ উপজেলার ৮৭ ইউনিয়নের প্রায় ১১ লাখ ৫৫ হাজার ৩০০ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। ৩৩৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৩৫ হাজার মানুষ।

সদর উপজেলার দরবেশপুর গ্রামের বিবি রহিমা বলেন, বন্যার পানি আবার বাড়ছে। মানুষ জিনিসপত্র গুছিয়ে নিচ্ছে। গত বন্যায় আমার প্রায় ৪০ একরের ঘেরের এক কোটি টাকার মাছ ভেসে গেছে। এছাড়া খামার ও সবজির প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। সব শেষ এখন আর কিছুই বলার নাই।

বেগমগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম বলেন, বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় বাড়িতে এসেছি আজ ৩ দিন। অনেক কিছু গুছিয়ে বসবাসের উপযোগী করেছি। গতকালের বৃষ্টিতে এখন আশ্রয়কেন্দ্রে যাচ্ছি। আল্লাহ সহায় নাহলে আমাদের আর কিছুই করার নাই।

ফাইয়াজ ইফতি নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, গত বেশ কিছু দিন সড়কে পানি একদম ছিল না। সবগুলো শুকিয়ে গিয়েছিল। আবার একরাতের বৃষ্টিতে পুরা রাস্তা এবং বাসা পানির নিচে চলে গেছে। ফলে বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হচ্ছে। আল্লাহ সহায় হোন।

জেলা আবহাওয়া কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার দিনে তেমন বৃষ্টি হয়নি। কেবল রাতে হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি ও বজ্রসহ বৃষ্টি হচ্ছে। আবার কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হচ্ছে। শনিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ১১১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বর্তমানে সমুদ্রে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত চলছে।

হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুভাশিষ চাকমা বলেন, বৈরী আবহাওয়ায় হাতিয়ার প্রায় ১০টি ট্রলার ডুবে গেছে। এতে করে এখনো ৩০ জনের অধিক জেলে নিখোজ আছে। বর্তমানে দ্বীপ হাতিয়ার সাথে আমাদের সব ধরনের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। কেউ হাতিয়ায় আসতে পারছে না আবার যেতেও পারছে না।

নোয়াখালীর নবাগত জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ বলেন, ফের নোয়াখালী জেলা বন্যার কবলে পড়ছে। আমরা উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্গম এলাকায় যোগাযোগ রাখছি। আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করা হয়েছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্রে আসছেন। বৃষ্টি না হলে আমাদের বন্যা পরিস্থিতি আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হবে বলে আমরা আশা করছি।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...