সহকর্মীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়ে চিরবিদায় নিলেন be বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিম হেলাল। জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে জানাজার নামাজ শেষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ও সহকর্মীদের পক্ষ থেকে তার কফিনে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর আগে ঢাকা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
সোমবার সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাব প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজায় সর্বস্তরের সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার নামাজ শেষে তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় প্রেস ক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন।
জানাজা নামাজের আগে তার ছেলে আভাস বলেন, আমার বাবা সাংবাদিক পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন আমি তার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। তার কাছে কেউ কিছু পাওনা থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি।
জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, আল্লাহ যেন তার বেহেস্ত নসিব করেন। আমি জাতীয় প্রেস ক্লাবের পক্ষ থেকে হেলাল ভাইয়ের পরিবারের সবার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি।
ইহসানুল করিম ১০ মার্চ রোববার রাত ৮টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। ১৯৪৯ সালে কুষ্টিয়া জেলায় তার জন্ম। তার স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রয়েছে।
প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।
শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর হয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধে অংশ নেন।
ইহসানুল করিম ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সংবাদ সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের নয়া দিল্লিতে বাসসের ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি, পিটিআই এবং ভারতের দ্য স্টেটমেন্ট ও ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।
বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণের পর একই বছরের ২০ মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে
প্রথমে এক বছরের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তার চুক্তির মেয়াদ দুইবার তিন বছর করে বৃদ্ধি করা হয়।