

বাংলাদেশের সরকারি ওয়েবসাইট থেকে বিপুল সংখ্যক নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। যেখানে তাদের নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর রয়েছে।
প্রাথমিকভাবে বলা হচ্ছে, কয়েক লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। তবে মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি অব মালয়ার আইন ও উদীয়মান প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মুহাম্মদ এরশাদুল করিম সরাসরি উল্লেখ না করলেও পরোক্ষভাবে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের প্রায় পাঁচ কোটি নাগরিকের তথ্য ফাঁস হয়েছে। তিনি বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ওপর নজর রাখেন।
বাংলাদেশের একটি সরকারি ওয়েবসাইট থেকে তথ্য ফাঁস হওয়ার বিষয়ে তিনি একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইয়াহুর ৩০০ কোটি গ্রাহকের তথ্য ফাঁস হওয়ার ঘটনা আছে। আর সরকারি সংস্থার কাছ থেকে ২০১৮ সালে ভারতের আধার কার্ডের ১১০ কোটি এবং ২০১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ কোটি ৮০ লাখ ভোটারের তথ্য ফাঁস হয়। ২০১৭ সালে মালয়েশিয়াতে ৪ কোটি ৬ লাখ মানুষের ফোন নম্বর ফাঁস হয়ে গিয়েছিল, যা ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। সে হিসাবে বাংলাদেশের ৫ কোটি মানুষের তথ্য ফাঁস হলে তা অন্যতম বড় ফাঁসের ঘটনা হবে।
সম্প্রতি মার্কিন প্রযুক্তি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চে এমন একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ঘটনাটি নিয়ে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। এই ঘটনায় নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা ঝুঁকিতে পড়তে পারে এবং বিভিন্ন ধরনের সাইবার অপরাধ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা।
এরই মধ্যে এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে তদন্তে নেমেছে সরকারের কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম (বিজিডি ই-গভ. সার্ট)। এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সংস্থাটি জানিয়েছে, সার্ট টিম ঘটনার একটি বিশদ তদন্ত শুরু করেছে, যার মাধ্যমে তথ্য ফাঁসের মাত্রা ও প্রভাব বোঝার জন্য সব রকম চেষ্টা করা হবে।
গত ৬ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক সংবাদমাধ্যম টেকক্রাঞ্চ-এ বাংলাদেশের সরকারি একটি ওয়েবসাইট থেকে লাখ লাখ নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার খবর প্রকাশিত হয়।
টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশি নাগরিকদের সম্পূর্ণ নাম, ফোন নম্বর, ই-মেইল ঠিকানা এবং জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরসহ ব্যক্তিগত তথ্য উন্মুক্ত হয়ে আছে ইন্টারনেটে।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই তথ্য ফাঁসের কারণে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান উভয়েই ঝুঁকিতে পড়বে, তথ্য প্রযুক্তির ভাষায় যাকে বলে ‘আইডেন্টিটি থেফট’ বা পরিচয় চুরি হওয়া। অর্থাৎ আপনার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে অন্য কেউ আপনার নামে বিভিন্ন অপরাধ করতে পারে।