রাজধানীর গুলশানে ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে আরেক পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় এক পথচারীসহ ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। শনিবার রাত ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত পুলিশ কনস্টেবলের নাম মনিরুল। গুলি ছোড়েন কনস্টেবল কাউসার আহমেদ। এক পর্যায়ে কাউসার অচেতন হয়ে পড়লে হেফাজতে নেয় পুলিশ। তারা দু’জনই ফিলিস্তিন দূতাবাসের বাইরে অবস্থিত পুলিশ বক্সে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ঘটনায় সাজ্জাদ হোসেন নামে এক পথচারী আহত হয়েছেন। তাঁর শরীরে তিনটি গুলি লেগেছে। তিনি জাপান দূতাবাসের গাড়িচালক। তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য এবং আশপাশ ঘিরে রাখেন। সেখানে ফুটপাত ও রাস্তায় রক্তের দাগ দেখা যায়। ৮ থেকে ১০টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।
রাত ২টার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন। পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, কেন এই ঘটনা ঘটেছে তাৎক্ষণিক তা আমরা জানতে পারিনি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফিলিস্তিন দূতাবাসের এক কর্মচারী বলেন, দূতাবাসের ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ পরপর ৮ থেকে ১০টি ঠুসঠাস শব্দ শুনতে পাই। পরে বাইরে বেরিয়ে দেখি, সড়কে অস্ত্র পড়ে আছে। আর দূতাবাসসংলগ্ন ফুটপাতে এক পুলিশ কনস্টেবল বসে আছেন। তাঁর থেকে ২০ গজ দূরেই পুলিশের পোশাক পরা একজন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে আছেন। তাঁর পাশেই সাদা পোশাকের একজন সাইকেল আরোহী পড়ে আছেন। তিনি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ সময় ফুটপাতে বসে থাকা কনস্টেবলকে ঘটনার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি উল্টাপাল্টা কথা বলেন। এ ঘটনায় আরও একজন গুলিবিদ্ধ হওয়ার কথা শুনেছি।
পাশের ভবনের এক নিরাপত্তাকর্মী জানান, রাতে তিনি ভবনের ফটকে বসে ছিলেন। গুলির শব্দ শুনে দৌড়ে ভেতরে চলে যান। এ সময় চারদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে বাইরে এসে দেখেন থমথমে অবস্থা। সড়ক ঘিরে রেখেছে পুলিশ। পুলিশের পোশাক পরা একজন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছেন।
জানা গেছে, ঘটনার কিছুক্ষণ আগে কনস্টেবল মনিরুল ও কাউসারের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে নিজের সঙ্গে থাকা পিস্তল বের করে মনিরুলকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছোড়েন কাউসার। গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মনিরুল নিহত হন। এ সময় রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় এক সাইকেলচালক গুলিবিদ্ধ হন। পরে আশপাশের মানুষজন তাঁকে উদ্ধার করে ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যান।
জানতে চাইলে গুলশান থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম রাতে গণমাধ্যমকে বলেন, ফিলিস্তিন দূতাবাসের সামনে এক পুলিশ আরেক পুলিশকে গুলি করেছে। মরদেহ ঘটনাস্থলেই রয়েছে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ এক পথচারীকে পার্শ্ববর্তী একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা চলছে।