ডিসেম্বর ২২, ২০২৪

সম্ভাবনাময় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন উদ্যোগ (এসওই) বা সরকারি সংস্থা ও কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করতে চায় ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। এ জন্য সম্প্রতি সময় চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ বিভাগকে চিঠি দিয়েছে স্টক এক্সচেঞ্জটি। চিঠিতে অর্থ বিভাগের সচিব মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের সঙ্গে ডিএসইর দুজন কর্মকর্তা দেখা করার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। স্টক এক্সচেঞ্জটির কর্মকর্তারা হলেন- ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক এজিএম সাত্তিক আহমেদ শাহ এবং বাজার উন্নয়ন বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. সামিউল ইসলাম।

ডিএসইর চিঠিতে দেশের অর্থনীতি ও পুঁজিবাজার সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়, দেশের শিল্পায়ন ও পুঁজিবাজার উন্নয়নের সাথে সাথে অর্থনৈতিক উন্নয়নের অটল প্রচেষ্টা এবং মূল্যবান অবদানের জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা। সাম্প্রতিক দশকে বাংলাদেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একটি কার্যকর পুঁজিবাজার অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে একটি টেকসই দেশ নিশ্চিত করতে পরিবর্তনকারী ভূমিকা পালন করতে পারে। ডিএসই বাংলাদেশের প্রধান পুঁজিবাজার। যেটা উদ্যোক্তা, বিনিয়োগকারী, ভেঞ্চার ক্যাপিটালিস্ট এবং মধ্যস্থতাকারীদের একত্রিত করতে এবং সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সারিবদ্ধভাবে কাজ করে পুঁজিবাজারকে গতিশীল রাখে।

চিঠিতে আরো বলা হয়, আমরা অত্যন্ত আনন্দিত যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত করার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। যেটা তালিকাভুক্ত হওয়া রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোকে দায়িত্বশীল, দক্ষ ও প্রতিযোগিতামূলক প্রতিষ্ঠানে রূপান্তরিত করবে। এতে কোম্পানির করপোরেট গভর্নেন্স এবং স্বচ্ছতাও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পাবে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ডিএসইর বার্ষিক কর্ম সম্পাদন চুক্তির প্রয়োজনীয়তা অনুসারে রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলোর মধ্যে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির সচেতনতা তৈরি করতে হবে। এই বিষয়ে আপনার সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলো তালিকাভুক্তির বিষয়ে ডিএসই আপনার সঙ্গে আলোচনা করতে চায়। তাই ডিএসইর দুইজন কর্মকর্তার আপনাদের সঙ্গে দেখা করে আলোচনা করা জন্য সময় ও অনুমতি প্রয়োজন। বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ জানানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত ৯ মে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রধানমন্ত্রী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির নির্দেশ দেন। সেই নির্দেশকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা।

তবে, দীর্ঘদিন ধরেই পুঁজিবাজারে সরকারি কোম্পানিগুলোকে তালিকাভুক্ত করতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) নেতৃত্বে কাজ করে যাচ্ছে ডিএসই। সরকারি কোম্পানিগুলোর অনাগ্রহের কারণেই কয়েক দফা চেষ্টা করেও তাদেরকে পুঁজিবাজারে আনা সম্ভব হয়নি। অবশেষে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থনীতিকে গতিশীল করতে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো তালিকাভুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তাই, প্রধানমন্ত্রীর এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে অর্থ বিভাগকে সহযোগিতা করতে চায় ডিএসই। এরই ধারাবাহিকতায় সচিবের সঙ্গে দেখা করতে চায় তারা।

প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দেওয়ার চার দিন আগেই অর্থাৎ ৫ মে সরকারি কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তি লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচির আয়োজন করতে চেয়ে অর্থ বিভাগকে চিঠি দেয় ডিএসই। সরকারি কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিদের সঙ্গে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে এ আয়োজন করতে চায় ডিএসই।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...