সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে কারসাজি ও জালিয়াতির অভিয়োগে অভিযুক্ত আবদুল কাদের ফারুকের বিষয়ে কঠোর অবস্থান নিচ্ছে অর্থ মন্ত্রণালয়। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমে “পুঁজিবাজারের খলনায়ক ফারুক” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পরিপ্রেক্ষিতে এবার নড়েচড়ে বসেছে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়। এরই ধরাবাহিকতায় পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কারসাজির নেপথ্যে আবদুল কাদের ফারুকসহ তার সহযোগীদের বিষয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন চেয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্মসচিব মো. জাহিদ হোসেন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি বিএসইসির কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, “গত ৬ মে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় “পুঁজিবাজারের খলনায়ক ফারুক” শিরোনামে প্রতিবেদন বা খবর প্রকাশিত হয়। উক্ত প্রতিবেদন বা খবরের বিপরীতে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের বিএসইসি ও বিআইসিএম শাখায় প্রেরণ করার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।”

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, আবদুল কাদের ফারুক পুঁজিবাজার থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য নানান অনিয়মের আশ্রয় নিয়েছেন এই ফারুক। কোনো কোনো এসময় এসব অনিয়মের কারণে তাকে ও তার সহযোগীদের একাধিকবার আর্থিক জরিমানা গুণতে হয়েছে। তারপরেও তিনি কারসাজি ও জালিয়াতিমূলক কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকেননি। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- পুঁজিবাজারে কোনো কোম্পানি প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) পক্রিয়ায় আসার আগে এক পয়সাও লগ্নি না করে জালিয়াতির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ভুয়া শেয়ার ইস্যু করা, কোনো কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসার আগে প্রাইভেট প্লেসমেন্ট প্রক্রিয়ায় শেয়ার বিক্রি করে নগদ টাকা লুটে নেওয়া, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির বাকি শেয়ার বেচে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া, তালিকাভুক্ত কোম্পানিকে লোকসানি সাজিয়ে ওই প্রতিষ্ঠানের টাকা ও সম্পদে নিজের নামে আরেকটি ব্যক্তিমালিকানাধীন কোম্পানিতে হস্তান্তর করা ইত্যাদি।

ফারুক ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে যেসব কারসাজির অভিযোগ রয়েছে তার মধ্যে উল্রেখযোগ্য হলো- ২০১৩ সালে আরএন স্পিনিংয়ে রাইট কেলেঙ্কারির আলাদা অভিযোগ ১.৩৫ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। ২০১৪ সালে তথ্য গোপন করে ফার কেমিক্যালের আইপিও অনুমোদনের চেষ্টায় ৫ লাখ টাকা জরিমানা গুণতে হয়। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীর রাইট শেয়ার কেনার টাকা নয়ছয় করায় গুণতে হয় ৫০ লাখ টাকা জরিমানা। এছাড়া আরএন স্পিনিংয়ের আর্থিক প্রতিবেদনে অসঙ্গতির কারণে ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। ২০১৬ সালে ফ্যামিলিটেক্সের শেয়ার নিয়ে পরিবারের ১৮ সদস্য ও কোম্পানির সংঘবদ্ধ কারসাজিকারণে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এছাড়া ফার কেমিক্যাল ও আরএন স্পিনিং শেয়ার কারসাজির কারণে জরিমানা করা হয় ২৫ লাখ টাকা।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *