ডিসেম্বর ২৩, ২০২৪

পুঁজিবাজারে গতিশীলতা বাড়াতে বেশ কিছু বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রোববার (১৫ জানুয়ারি) গণভবনে পুঁজিবাজার পরিস্থিতি নিয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি বেশ কিছু বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন।

নির্ভরযোগ্য সূত্রে এ সব তথ্য জানা গেছে।

বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান পুঁজিবাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করেন। এ সময়ে তিনি পুঁজিবাজারের উন্নয়নে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরেন। দেশের অর্থনীতি যেভাবে বিকশিত হচ্ছে, ঠিক একইভাবে পুঁজিবাজারকেও বিকশিত করতে প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

বৈঠকে বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বন্ডে বিনিয়োগকে পুঁজিবাজার এক্সপ্রোজারের বাহিরে রাখা, ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ডিপোজিটরি ফান্ডকে পুঁজিবাজার এক্সপ্রোজার লিমিটের আওতার বাহিরে রাখার এবং পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণের বিপরীতে ১ শতাংশ সাধারণ সঞ্চিতি (প্রভিশনিং) রাখার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।

এছাড়া পুঁজিবাজারের অগ্রযাত্রায় যেসব পলিসিলিগত পরিবর্তন বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন তা নিয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী।

তথ্য মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের হস্তক্ষেপে বন্ডে বিনিয়োগকে পুঁজিবাজার এক্সপ্রোজারের বাহিরে রাখতে ব্যাংক কোম্পানি আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আগামী কেবিনেট মিটিংয়ে এই আইনটি পাশ করা হবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র থেকে জানা গেছে। আর এটি যেন দ্রুত পাশ করা হয়, সে বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছেন প্রধানমন্ত্রী।

এদিকে আইসিবি ডিপোজিটরি ফান্ডকে পুঁজিবাজার এক্সপ্রোজার লিমিটের আওতার বাহিরে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আইসিবির ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি করে পুঁজিবাজারকে গতিশীল করার লক্ষ্যে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়ন হলে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করার সক্ষমতা ফিরে পাবে আইসিবি। আর এ বিষয়টি দ্রুত বস্তবায়নের জন্য দিক নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। যা একটি বোর্ড মিটিংয়ের মাধ্যমে প্রস্তাব তৈরি করে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে পাঠবে আইসিবি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ বিষয়টি যেন দ্রুত পাশ করে, সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবেন বলে জানিয়েছেন সরকারপ্রধান।

আর পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিলে ২ শতাংশ সাধারণ সঞ্চিতি রাখতে হয়। অথচ অন্য যে কোনো ঋণের ক্ষেত্রে ১ শতাংশ সাধারণ সঞ্চিতি রাখতে হয়। এ বিষয়টি ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বৈষম্য সৃষ্টি করে। ফলে এ বৈষম্য ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে নিরুৎসাহিত করে। তাই এ বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে আনা হয়েছে। তিনি এ সমস্যা সমাধানের দ্রুত আশ্বাস দিয়েছেন।

এছাড়া পুঁজিবাজারের অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে তথা সরকারের ভাবমূর্তী বিনষ্ট করার লক্ষ্যে দীর্ঘ ১২ বছর ধরে চক্রান্ত করে যাচ্ছেন বাংলাদেশ ব্যাংক ডিজিএম মো. আমিনুর রহমান চৌধুরী। তিনি বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশনে দায়িত্বে থাকাকালীন সময়ে পুঁজিবাজারকে বিভিন্ন ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করার অপচেষ্টা করেছেন। এ বিষয়ে সরকার প্রধানের নজরে আনা হয়েছে। পুঁজিবাজারের অগ্রযাত্রায় যেসব পলিসিলিগত পরিবর্তন বা পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রযোজন তা নিয়ে অতিদ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেন প্রধানমন্ত্রী। আর এ পদক্ষেগুলো দ্রুত বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট দফরতকে সহায়তা করারও দিক নির্দেশনা দিবেন বলে জানিয়েছেন প্রধারনমন্ত্রী, যা তিনি নিজে তত্ত্বাবধন করবেন বলে জানিয়েছেন।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...