নভেম্বর ১৫, ২০২৪

পুঁজিবাজারে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি ও আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে সাত ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া জরিমানা ধার্য করা ব্যক্তিদের মধ্যে একজনকে তিন বছরের জন্য পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজে নিযুক্ত থাকতে নিষিদ্ধ করেছে কমিশন।

বিশ্বস্ত সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

যেসব কোম্পানির শেয়ার নিয়ে কারসাজি হয়েছে সেগুলো হলো- বিকন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও নিটল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড।

এর মধ্যে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার নিয়ে শেয়ার কারসাজির জন্য মো. আমজাদ হোসেন পাটোয়ারীকে ৩৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ২০২১ সালের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির শেয়ার নিয়ে তিনি কারসাজি করেন। মো. আজাদ হোসেন পাটোয়ারী সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১৭(ই)(ভি) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লঙ্ঘন করেছেন। তিনি সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে বিকন ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছেন, যা বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।

ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার নিয়ে কারসাজির জন্য মো. সাইফ উল্লাহকে ৩০ লাখ টাকা এবং এ জি মাহমুদকে ২৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সম্পর্কে তারা ভাই। ২০২১ সালের মে থেকে আগস্ট পর্যন্ত সময়ে কোম্পানির শেয়ার নিয়ে তারা দুজন কারসাজি করেন। এই দুই ব্যক্তিকে এর আগেও একাধিকবার শেয়ার কারসাজির জন্য জরিমানা করেছে বিএসইসি। সিটি ব্রোকারেজের বিনিয়োগকারী মো. এ.জি. মাহমুদ ও মো. সাইফ উল্লাহ। এ দুই ভাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ধারা ১৭(ই)(ভি) প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে লঙ্ঘন করেছেন। তারা সিরিজ লেনদেনের মাধ্যমে ইনডেক্স অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম বাড়াতে ভূমিকা রেখেছেন, যা বিএসইসির তদন্তে উঠে এসেছে।

নিটল ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার নিয়ে কারসাজির জন্য একেএম মনিরুল হককে ২০ লাখ টাকা, সালওয়া তাবাসসুম হককে ২০ লাখ টাকা, ওয়াসিফা তাবাসসুম হককে ২০ লাখ টাকা এবং তাদের প্রতিষ্ঠান উখতানি এন্টারপ্রাইসকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তবে কারসাজিতে এদের জরিমানা করা হলেও আলোচিত বিনিয়োগকারী আবুল খায়ের হিরুকে জরিমানা করা হয়নি। যদিও হিরুর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ডিআইটি কো-অপারেটিভ লিমিটেড। এছাড়াও রয়েছে একই সিন্ডিকেটের সদস্য প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, এসবিএল ক্যাপিটাল, কারিব ট্রেডার্স, শিক্ষিত বেকার কেন্দ্রীয় সংঘ, মো. জসিম উদ্দিন, প্রিমিয়ার ব্যাংক ক্যাপিটাল, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স, একেএম মনিরুল হক, সিরাজুল ইসলাম, হোসাম মো. সিরাজ, মরিয়ম নেসা ও উখতান এন্টারপ্রাইজ। বেশি শেয়ার বিক্রির তালিকায় রয়েছে ডিআইটি কো-অপারেটিভ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, কারিব ট্রেডার্স, শিক্ষিত বেকার কেন্দ্রীয় সংঘ, মো. জসিম উদ্দিন, প্রিমিয়ার ব্যাংক ক্যাপিটাল, আইসিবি ইউনিট ফান্ড, আইসিবি, ওয়াসফিয়া তাবাসসুম হক, মাহমুদুল হক শামীম, সালওয়া তাবাসসুম হক, প্যারামাউন্ট ইন্স্যুরেন্স ও সিরাজুল ইসলাম।

এছাড়া সিকিউরিটিজ আইন পরিপালনে ব্যর্থতা এবং পুঁজিবাজারে শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্য গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক চৌধুরী খালেদ সাইফুল্লাহকে ১ কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাকেপুঁজিবাজার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে কাজে নিযুক্ত থাকাতে তিন বছরের জন্য নিষিদ্ধ করা হয়েছে। মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর সদস্যভুক্ত গ্রামীণ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্টের অফিস পরিদর্শনকালে নানান অনিয়ম পায় বিএসইসি, যা তাদের তদন্ত প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...