সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৪

মিউচুয়াল ফান্ড খারাপ হওয়ার কথা আমরা বারবার আলোচনা করি। এক্ষেত্রে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দায়ি বলে মনে করেন পুঁজিবাজার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আবু আহমদ।

তিনি বলেন, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারেনি বিএসইসি। ফান্ড ম্যানেজার টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে যায় কিভাবে? এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাই বড় দায়ি।

বুধবার পুঁজিবাজারের সাংবাদিকদের সংগঠন ক্যাপাটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরাম আয়োজিত প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবু আহমেদ বলেন, বার্ষীক আর্থিক প্রতিবেদন বিনিয়োগ সিদ্ধান্তোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমি যে কোম্পানিতে বিনিয়োগ করবো সে কোম্পানি সম্পর্কে যদি নিজে না জানি তাহলে কেন বিনিয়োগ করলাম। নলেজের কোন বিকল্প নেই। নলেজ হচ্ছে এক ধরনের সম্পদ।

তিনি বলেন, মিউচুয়াল ফান্ড খারাপ হওয়ার কথা আমরা বারবার আলোচনা করি। এক্ষেত্রে আমি মনে করি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন দায়ি। তারা বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে পারে না। ফান্ড ম্যানেজার টাকা পয়সা নিয়ে ভেগে যায় কিভাবে? এজন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাই দায়ি

তিনি আরো বলেন, প্রেসমেন্ট শেয়ার আরেকটি বড় দুর্নীতির জায়গা। এটা নিয়েও রেগুলেটর কাজ করতে পারে নি। ভালো আইপিও আসছে না, আনার চেষ্টাও করা হয়নি। ইনটেনসিভ না থাকলে ভালো কোম্পানি এখানে আসবে কেন? এখাানে ভালো কোম্পানি আনতে হলে কোম্পানিকে ভালো কিছু সুবিধা দিতে হবে। এই সুযোগটাও এতদিনে ব্যবস্থা করতে পারেনি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।

অধ্যাপক আবু আহমেদ আরো বলেন, অর্থনীতিতে অলিগার্ন তৈরি হয়েছে। এদেরকে প্রশ্রয় দিয়ে তৈরি করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো। দেশের জিডিপি গ্রোথের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত তাদের অল্প কয়েক জনের দখলে। তাহলে সাধারণ মানুষের দুর্দশা তে হবেই।

তিনি বলেন, যারা লুট করেছে, তাদের ধরতে হবে। ইসলামী ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংককে যারা লুট করেছে তাদের শাস্তি দিতে হবে। নাহলে জনগণের মতে আস্থা ফিরবে না।

তিনি আরো বলেন, একসময় পুঁজিবাজারে ৩৩ লক্ষ বিও হিসাব ছিলো, এখন সেটি ১৩ লাখে নেমে এসেছে।

ড. মোহাম্মদ ইউনুস ও তার নেতৃত্বধীন সরকার যদি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নে ব্যর্থ হয়, তাহলে বাংলাদেশের উন্নয়ন অন্য কেউ করে দিতে পারবে, এমন কাউকে আমি দেখি না।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফ সভাপতি, পরে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফ জয়েন সেক্রেটারি রেজওয়ান, এরপরে বক্তব্য রাখেন সিএমজেএফের সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান।

সাবেক সভাপতি জিয়াউর রহমান বলেন, একটা সময় অর্থনীতি তথা পুঁজিবাজার নিয়ে বিশ্লেষন দেয়ার মতো তেমন কোন লোক পাওয়া যেত না, সেই সময় থেকে সাপোর্ট দিয়ে যাচ্ছের অধ্যাপক আবু আহমেদ স্যার। আমাদের এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আগামীতে যেন আমরা আরো বেশি গুরুত্বপূর্ণ নিউজ করতে পারি, সেটাই চাই।

ডিবিএ সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. সাইফুদ্দিন বলেন,একজন সাংবদিক হিসেবে সবচেয়ে বড় কাজটা হলো, আপনি যা লিখছেন তা বস্তুনিষ্ঠ কিনা। পুঁজিবাজারের জন্য এই দিকটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বেশি লেখার দরকার নেই, যতটুকু লিখেন সেটা যেন বস্তুনিষ্ঠ হয়, এটাই মুখ্য। মানুষকের কাছে সঠিক তথ্যটি প্রচার করতে হবে।

তিনি বলেন, আমাদের ব্রোকারেজ এসোসিয়েশন থেকে বিশ্লেষণে বড় একটা সাপোর্ট ভবিষ্যতে তারা দিবেন, আমি এসোসিয়েশনের কাছে সেই দাবি রাখবো। আমার বিশ্বাস আপনাদের এই প্রশিক্ষণের মহৎ উদ্যোগটি পুঁজিবাজার বিষয়ক রিপোর্টিংয়ে বড় একটা ভুমিকা রাখবে।

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *