জাতীয় নির্বাচনের আগে পাকিস্তান সরকার ভঙ্গুর অর্থনীতি ও উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে জ্বালানির দাম আরেক দফা বাড়িয়েছে। এতে হাজারো পাকিস্তানি দোকান প্রতিবাদে বন্ধ রেখেছেন। এরমধ্যে শনিবার লাহোর, করাচি ও পেশোয়ারজুড়ে দোকানপাট বন্ধ রাখা হয়। বিদ্যুৎ বিল ও কর বাড়ানোর প্রতিবাদ জানিয়ে বন্ধ বাজারগুলোর সামনে প্ল্যাকার্ড টানানো হয়েছে।
তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল হক কাকারের সরকার বৃহস্পতিবার পেট্রোল ও ডিজেলের দাম লিটারপ্রতি যথাক্রমে ১৪ রুপি ৯১ পয়সা এবং ১৮ রুপি ৪৪ পয়সা করে বাড়িয়েছে। এতে পেট্রোল ৩০৫ রুপি ৩৬ পয়সা এবং ডিজেলের দাম দাঁড়িয়েছে ৩১১ রুপি ৮৪ পয়সা। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পেট্রোল ও ডিজেলের দাম ৩০০ রুপি ছাড়িয়েছে। এতে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে থাকা দেশটির জনগণের উদ্বেগ আরও বেড়েছে।
লাহোরের টাউনশিপ ট্রেডার্স ইউনিয়নের সভাপতি আজমল হাশমি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধের আন্দোলনে সবাই অংশগ্রহণ করছে। কারণ, পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সরকারকে অবশ্যই প্রণোদনা বা ত্রাণ দিতে হবে।
চলতি বছরের শুরুতে ব্যাপক জ্বালানি সংকট দেখা দেয় দেশটিতে। এতে সৃষ্টি হয় ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিপর্যয়। গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় বন্ধ রাখা হয় বিদ্যুৎ উৎপাদন। পাশাপাশি নিত্যপণ্যের সংকট দেখা দেয়। সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে যায় দুধ, চিনি, ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। বিদ্যুৎ সংকটে বন্ধ হয়ে যায় টেক্সটাইল শিল্পসহ অনেক কলকারখানা।
চলতি বছরের মাঝামাঝিতে খেলাপি হওয়া এড়াতে দেশটি আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) সঙ্গে একটি চুক্তি করতে বাধ্য হয়েছিল। এ চুক্তির শর্ত অনুযায়ী সরকারকে জ্বালানি ভর্তুকিতে লাগাম টানতে হচ্ছে। এতে দেশটিতে ডিজেল-পেট্রোল ও বিদ্যুতের দাম ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে।
তাছাড়া আগামী মাসে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা। আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী এমন সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রভাবশালী দলগুলোর জন্য ব্যবসায়ীদের সমর্থন পাওয়া কঠিন হবে।
আগস্টে দেশটির মূল্যস্ফীতি ২৭ দশমিক ৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে। জুলাইয়ে গাড়ির জ্বালানির ব্যয় ৮ শতাংশ বেড়েছে।
জাতীয় নির্বাচন আয়োজনে গত মাসে সংসদ ভেঙে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে এখনও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা
হয়নি।