সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনকে সামনে রেখে পাঁচ লাখ অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতা দিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। অবৈধ অভিবাসী স্বামী-স্ত্রীকে বৈধতার লক্ষ্যে আবেদন করার জন্য একটি ‘প্যারোল ইন প্লেস’ পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করছে হোয়াইট হাউস।

হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, যারা কমপক্ষে ১০ বছর ধরে আমেরিকায় রয়েছেন, তাদের জন্য এই প্রক্রিয়া প্রযোজ্য হবে। একই সঙ্গে বৈধভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কাজ করার অনুমতি পাবেন তারা। তবে কীভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে তা এখনো পরিষ্কার নয়।

হোয়াইট হাউস গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুন) ঘোষণা করেছে, বাইডেন প্রশাসন আগামী মাসগুলোতে মার্কিন নাগরিকদের নির্দিষ্ট কিছু স্বামী–-স্ত্রীকে বৈধতা ছাড়াই স্থায়ী বসবাস এবং এরপর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার অনুমতি দেবে। মার্কিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মতে, এর সংখ্যা পাঁচ লাখ হতে পারে। ওবামা প্রশাসন ২০১২ সালে ‘ডেফার্ড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভাল’ বা ‘ডাকা’ ঘোষণা করার পর এটিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ত্রাণ কর্মসূচি বলা বিবেচনা করা হচ্ছে। হোয়াইট হাউসের ধারণা, এর মাধ্যমে মার্কিন নাগরিকদের পাঁচ লাখেরও বেশি স্বামী-–স্ত্রী উপকৃত হবেন। এই ছাড়া ২১ বছরের কম বয়সী ৫০ হাজার যুবকও বৈধতা পাবেন। যাঁদের বাবা-মায়ের একজন আমেরিকান নাগরিকের সঙ্গে বিবাহিত।

ইমিগ্রেশন অ্যাডভোকেসি গ্রুপগুলোর তথ্য অনুসারে মার্কিন নাগরিকদের প্রায় ১১ লাখ স্বামী–-স্ত্রী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধভাবে বসবাস করছেন। গ্রুপগুলো বলেছে, তাদেরকে নাগরিকত্ব দেয়া হলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে ১৬ বিলিয়ন ডলার অতিরিক্ত বরাদ্দ দিতে হবে।

বৃহত্তর অভিবাসন সংস্কার প্যাকেজের অংশ হিসাবে লাখ লাখ অবৈধ অভিবাসীর নাগরিকত্ব দেওয়ার ব্যাপারে প্রেসিডেন্ট বাইডেন পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বিবেচনা করছেন। এই বছরের শুরুর দিকে সিনেটে উত্থাপিত একটি পৃথক বিল প্রশাসনের সমর্থন অর্জন লাভ করেছিল। কিন্তু তা পাস করা সম্ভব হয়নি রিপাবলিকানদের কারণে।

ইতোমধ্যেই রিপাবলিকানরা অভিযোগ করেছে, প্রেসিডেন্ট তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। নভেম্বরে আসন্ন নির্বাচনে এই ধরনের পদক্ষেপ কী প্রভাব ফেলতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। তবে তার প্রচারকারীরা আশা করেন, প্যারোল সম্প্রসারণ তাকে অ্যারিজোনা ও নেভাদার মতো সুইং রাজ্যে ভোটের ব্যাপারে সাহায্য করবে।

প্রেসিডেন্ট বাইডেন ৪ জুন মঙ্গলবার ইঙ্গিত দিয়েছেন অভিবাসনের বিষয়ে আরও উদার পদক্ষেপ সামনের সপ্তাহগুলোতে আসতে পারে। গত সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট বাইডেন দক্ষিণ সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের আশ্রয়ের ব্যাপারে একটি নির্বাহী আদেশ ঘোষণা করেন। এই নির্বাহী আদেশ এখনো সীমান্তে অবৈধ অভিবাসীদের সীমান্ত ক্রসিংয়ের অনুমতি মেলেনি। এই আদেশ কিছু আইন প্রণেতাদের নিন্দা এবং নাগরিক অধিকার গোষ্ঠীগুলোর কাছ থেকে তাৎক্ষণিক মামলার হুমকিসহ শুধু এটি একটি উদার ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। ৪ জুন মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘আজ আমি সীমান্ত সুরক্ষিত করার জন্য আমাদের কী করতে হবে, তা নিয়ে কথা বলেছি। সামনের সপ্তাহগুলোতে আমি কীভাবে আমাদের অভিবাসন ব্যবস্থাকে আরও ন্যায্য এবং আরও ন্যায়সঙ্গত করতে পারি তা নিয়ে কথা বলব।’

এ প্রসঙ্গে হোয়াইট হাউসের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছি প্রশাসন নীতিগত বিকল্প পথ খুঁজছে এবং আমরা ভঙ্গুর অভিবাসন ব্যবস্থার সুরাহার জন্য পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্যারোল আরও বিস্তৃতভাবে বাইডেন প্রশাসনের মাধ্যমে সিবিপি ওয়ান অ্যাপ ব্যবহার করে পোর্টের মাধ্যমে দিনে ১ হাজার ৫শ’ জনের বেশি এবং সেই সঙ্গে কিউবা, হাইতি, নিকারাগুয়া ও ভেনিজুয়েলার নাগরিকদের জন্য একই প্রক্রিয়ায় মাসে ৩০ হাজার জনকে আসার সুযোগ দেওয়া হবে।’

শেয়ার দিয়ে সবাইকে দেখার সুযোগ করে দিন...

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *